বের্নাবেউয়ে এগিয়ে গিয়েও সিটিকে হারাতে পারল না রিয়াল

দুই দলের ফাইনালের ভাগ্য এবার লেখা হবে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 08:56 PM
Updated : 9 May 2023, 08:56 PM

শুরুর চাপ ধরে রাখতে পারল না ম্যানচেস্টার সিটি। পাল্টা আক্রমণ শুরু করল রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিউস জুনিয়রের অসাধারণ নৈপুণ্যে এগিয়েও গেল তারা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমজমাট লড়াইয়ে যদিও সেই ব্যবধান রইল না। কেভিন ডে ব্রুইনের দুর্দান্ত গোলে স্বস্তি নিয়ে ফিরল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।

দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলা এবং সেই ফেব্রুয়ারি থেকে অপরাজিত সিটি এখানেও আক্রমণাত্মক শুরু করে। অবশ্য প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণটা করে রিয়াল।

তৃতীয় মিনিটে নিজেদের সীমানায় বেনজেমার দারুণ ব্যাকহিল পাস ধরে সাইডলাইন ধরে আক্রমণে ওঠেন ভিনিসিউস। সমান গতিতে এগিয়ে যান বেনজেমা; তবে প্রতিপক্ষের বক্সের বাইরে গিয়ে সতীর্থের পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি তিনি।

অষ্টম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নেয় সিটি। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডে ব্রুইনের জোরাল শট ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। ছয় মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে রদ্রির নিচু শটও ঝাঁপিয়ে ফেরান রিয়াল গোলরক্ষক।

শুরু থেকে পোস্টে ব্যস্ত সময় কাটতে থাকে কোর্তোয়ার। পরপর দুই মিনিটে ভালো দুটি সুযোগ পান আর্লিং হলান্ড; কিন্তু প্রথমবার গোলরক্ষক বরাবর শট নেওয়ার পর হেডও করেন ওই একইরকম।

প্রথম ২০ মিনিটে ৭০ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ছয়টি শট নেয় সিটি, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে। অবশ্য প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনো শটই নিতে পারেনি তারা।

এরপর একটু একটু করে পাল্টা চাপ দেওয়া রিয়াল ৩৪তম মিনিটে ভালো একটি আক্রমণ শাণায়। তবে ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস বেনজেমা বক্সে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় তার হাতে বল লাগে।

এর দুই মিনিট পরই অসাধারণ এক গোলে দলকে এগিয়ে নেন ভিনিসিউস। বাঁ থেকে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার পাস ধরে একটু আড়াআড়ি ছুটে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গোলের উদ্দেশ্যে এটাই ছিল তাদের প্রথম ও প্রথমার্ধে একমাত্র শট।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ পায় সিটি। তবে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ওয়ান-অন-ওয়ানে কেভিন ডে ব্রুইনের কোনাকুনি শট ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর বক্সে ঢুকে হলান্ডের নেওয়া শট দারুণভাবে রুখে দেন ডিফেন্ডার ডাভিড আলাবা।

পরের ১৫ মিনিটে প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য করে রিয়াল। চাপ সামলে ৬৭তম মিনিটে একক নৈপুণ্যে গোলে সমতা টানেন ডে ব্রুইনে। দূর থেকে নিচু জোরাল শটে বল জালে পাঠান বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।    

৭৮তম মিনিটে আবার এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। তবে টনি ক্রুসের দূরের পোস্টে বাড়ানো ক্রসে বেনজেমার হেড দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক এদেরসন।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও দূর থেকে চেষ্টা চালায় রিয়াল। অহেলিয়া চুয়ামেনির জোরাল শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে কোনো বিপদ হতে দেননি ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদেরসন।

প্রথমার্ধে মাত্র লক্ষ্যে একটি শট নেওয়া রিয়াল দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখে। এই অর্ধে ১২টি শট নেয় তারা, যদিও এর মাত্র দুটিই ছিল লক্ষে। বিপরীতে দ্বিতীয় ভাগে চারটি শট নিয়েই গোল আদায় করে নেয় সিটি।

গত মৌসুমে দুই লেগের সেমি-ফাইনালের অধিকাংশ সময় দাপট দেখিয়েও বের্নাবেউয়ে শেষ কয়েক মিনিটের ছন্দপতনে ছিটকে গিয়েছিল সিটি। এবার ফিরতি লেগ তাদের মাঠে, প্রতিশোধের সুপ্ত বাসনায় আগামী বুধবার চেনা আঙিনায় মাঠে নামবে তারা।

সেক্ষেত্রে রেকর্ড ১৪ বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের সামনে চ্যালেঞ্জটা একটু বেশিই।