সান্তোসের আঙিনায় ভক্তদের ভালোবাসায় শেষবারের মতো সিক্ত হওয়া পেলেকে পারিবারিক আয়োজনে সমাহিত করা হচ্ছে।
Published : 03 Jan 2023, 11:05 PM
প্রিয় সান্তোসের আঙিনায় তিনি এলেন শেষবারের মতো। মাঠের ঠিক মাঝে ফুটবলের মহায়নায়ক পেলে থাকলেন ২৪ ঘণ্টা। হাজারো ভক্তদের ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন। এরপর ‘দ্য কিং’ সমাহিত করার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হলো সান্তোসের মেমোরিয়াল নেক্রোপোল ইকুমেনিকা সমাধিক্ষেত্রে।
এই সমাধিক্ষেত্রের দশম তলায় পারিবারিক আয়োজনে সমাহিত করা হবে ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলেকে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ হয়েছে, খেলোয়াড় জীবনে দশ নম্বর জার্সি পরেছেন বলে এই সংখ্যাটি তার খুব প্রিয় এবং সে কারণে দশ নম্বর তলা বেছে নেওয়া হয়েছে তার চিরঘুমের স্থান হিসেবে।
গত বৃহস্পতিবার ৮২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান পেলে। তারপরও নিথর শরীর নিয়ে মাঝের কয়েকটা দিন এই জাদুকর ছিলেন ধরণীতে। মঙ্গলবার একেবারে চলে গেলেন দৃষ্টির আড়ালে। যদিও মনের গহীনে ঠিকই কাল থেকে কালান্তরে থেকে যাবেন ‘ও রেই।’ শেষ শ্রদ্ধার অনুষ্ঠানে আসা ভক্তদের ভারী কণ্ঠে এই কথাটি এসেছে ঘুরেফিরে।
স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টা থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ভক্তরা। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় পুরো সান্তোসের মানুষ যেন জড়ো হয়েছিলেন সেখানে। পরে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় তিন ঘণ্টার বেশি সময়ের যাত্রা শেষে পেলেকে নিয়ে যাওয়া হয় সমাধিক্ষেত্রে। রাস্তার দুই ধারে অগণিত মানুষ শেষবারের মতো বিদায় জানান পেলেকে।
ফুটবল কিংবদন্তির শতবর্ষী মা সান্তোসের মাঠে এসেছিলেন শেষবারের মতো ছেলেকে দেখতে। পরে বাড়ির সামনে দিয়ে শেষ যাত্রায়ও বাসার ছাদ থেকে দেখেন তিনি।
খেলোয়াড়ী জীবনের পুরোটা সান্তোসে কাটিয়েছেন পেলে। সুদূর বাংলাদেশের মানুষ যাকে ‘কালো মানিক’ বলে চেনে একনামে। ব্রাজিল সরকার ‘জাতীয় সম্পদ’ ঘোষণা করায় পেলের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরে খেলা হয়নি। যদিও ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের কসমস ক্লাবে খেলেছিলেন কিছুদিন।
আসলে পেলে এবং সান্তোস এমনই অবিচ্ছিন্ন সুতোয় গাঁথা যে, এই গ্রেট সবসময় চাইতেন তাই জীবনের শেষ যাত্রাও যেন সান্তোস থেকে হয়। বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় ক্লাবটির বোর্ডের সদস্য রেনাতো হাগোপিয়ানের কথাতেও উঠে আসে বিষয়টি।
“পেলে সবসময় চাইতেন তার শেষকৃত্য যেন সান্তোসে হয়, যেখানে তিনি জন্মেছিলেন, একজন ক্রীড়াবিদ এবং ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে বেড়ে উঠেছিলেন। পেলেকে ধন্যবাদ, দ্য কিং, সান্তোসের নাম (সমার্থক)-এই ক্লাব, এই শহর-সবসময় তার মনের গহীনে ছিল।”