ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে মাঠের লড়াই শুরুর আগে দেশের দুর্দশা তুলে ধরে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন ইউক্রেইনের খেলোয়াড়েরা।
Published : 14 Jun 2024, 08:33 PM
শুরু হতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সপ্তদশ আসর। দুদিন পর মাঠে নামবে ইউক্রেইন। এ সময়ে দেশটির শহরে, অলি-গলিতে শুরু হতে পারত উৎসব, উন্মাদনা। কিন্তু পরিস্থিতি নেই অনুকূলে। রাশিয়ার ‘আগ্রাসনে’ দেশটি আজ বিধ্বস্ত। ফুটবল মহাযজ্ঞের মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে আবেগঘন বার্তা দিলেন দলটির খেলোয়াড়রা। মনে করিয়ে দিলেন, উৎসবের বদলে আর্তনাদ চলছে তাদের জন্মভূমিতে।
আগামী সোমবার রোমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ‘ই’ গ্রুপে পথচলা শুরু করবে ইউক্রেইন। গ্রুপের অন্য দুই দল স্লোভাকিয়া ও বেলজিয়াম।
মূল মিশনে নামার আগে ইউক্রেইনের ১৩ জন ফুটবলার বৃহস্পতিবার এক ভিডিও পোস্ট করেছেন; সেখানে ২৭ মাস ধরে রাশিয়ার আগ্রাসনে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া শহর, মানুষের আহাজারি, দুর্দশা তুলে ধরা হয়েছে।
মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে প্রকাশ করা ওই ভিডিও বার্তায় বলা হয়েছে, “ইউরোর উৎসব আমাদের শহরগুলো করতে পারত। কিন্তু এই মুহূর্তে তারা একটা টুর্নামেন্টের জন্য নয়, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে।”
ভিডিওতে দেখানো হয়েছে গোলার আঘাতে ধ্বসে যাওয়া ভবন, ঘর-বাড়ি, বিমান হামলার পর নিহত-আহতদের সেচ্ছ্বাসেবীদের নিয়ে যাওয়া, ধ্বংসস্তুপ সরানোসহ আরও অনেক কিছু।
দিনামো কিয়েভের খেলোয়াড় মাইকোলা শাপারেনকোর জবানিতে তুলে ধরা হয়েছে ভেলাইকা নোভোসিলকা শহরের পরিস্থিতি। তিনি বলেছেন, “রাশিয়ানরা নোভোসিলকাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।”
মাক্সিম তালোভিয়েরোভ ও আনাতোলি ত্রুবিন নিজেদেরকে দোনেৎসকের বাসিন্দা উল্লেখ করেছেন। ত্রুবিন তুলে ধরেছেন শহরগুলোর দুর্দশা, “এ মুহূর্তে মাকিভকা, সাকি ও দোনেৎস্ক সাময়িকভাবে দখল করে রাখা হয়েছে।”
"Our cities would love to host the EUROs, but they are fighting for freedom!"
13 players from the Ukraine NT address the world before EUROs. Their hometowns have been affected by Russian aggression – they are either damaged or temporarily occupied. pic.twitter.com/TjhsR6h7OS
— Ukrainian Association of Football (@uafukraine) June 13, 2024
আলেক্সান্দার জিনচেনকো ভিডিওতে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন রাজধানী কিয়েভের রাদোমিশল শহর থেকে আসা আর্সেনালের খেলোয়াড় হিসেবে। তার কথা বলার সময় ভিডিওতে দেখানো হয়েছে বিস্ফোরণ এবং বাড়িঘরগুলোতে জ্বলতে থাকা আগুনের বিভৎস দৃশ্য।
তিন বছর আগের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলা ইউক্রেইন দলেও ছিলেন জিনচেনকো। রাশিয়ার আক্রমণের আগে এটাই ছিল শেষ ইউরোপিয়ান গ্রীষ্ম। জার্মানির এবারের টুর্নামেন্ট সামনে রেখে তিনি আগেই গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তাদের জন্য “এবারের আসর পুরোপুরি ব্যতিক্রম এবং বিশেষ।“
“এখনও কোনো কারণ ছাড়াই মানুষ মারা যাচ্ছে এবং আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
ফুটবল মাঠের লড়াই আর যুদ্ধের ময়দানে থাকার মধ্যে তুলনা করতে চান না জিনচেনকো। দেশের জন্য লড়াই করা যোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগাতে জার্মানির আসরে নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিতে চান তিনি।
“তাদের (যোদ্ধাদের) জন্য সময়টা ভীষণ ভীষণ কঠিন। আমাদের জন্য অবশ্যই এটা বাড়তি প্রেরণার। আমরা সবাই জানি, আমাদের পেছনে কারা আছে। আমাদের প্রয়োজন সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরা।”