কোপা আমেরিকা
আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষ ম্যাচে আনহেল দি মারিয়ার পারফরম্যান্স ছড়িয়েছে মুগ্ধতা, প্রশংসা করেছেন কোচ ও সতীর্থরা।
Published : 15 Jul 2024, 04:50 PM
দেশের হয়ে শেষবারের মতো খেলতে নেমে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন আনহেল দি মারিয়া। কোপা আমেরিকার ফাইনালে তার পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে সবাইকে। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে নিজের বিদায়ী ম্যাচটিতে জিতে নিয়েছেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ডের এই বিদায়কে কোচ লিওনেল স্কালোনির মনে হচ্ছে যেন কোনো সিনেমার চিত্রনাট্য।
ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে ১৬তম বার কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। কলম্বিয়ার ২৮ ম্যাচের অজেয় যাত্রা থামিয়ে গড়ে লাতিন আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি জয়ের রেকর্ড।
কোপা আমেরিকা দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলবেন অনেক আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন দি মারিয়া। তাই আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ফাইনাল-ই ছিল দি মারিয়ার শেষ ম্যাচ। শিরোপার স্বাদ নিয়ে শেষটা রাঙাতে পারলেন ৩৬ বছর বয়সী ফুটবলার।
খেলা শুরু হওয়ার আগে মাঠে বল নিয়ে আসেন দি মারিয়ার দুই মেয়ে পিয়া ও মিয়া। লিওনেল মেসি মাঠ ছাড়ার পর লম্বা সময় অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড ছিল ৩৬ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের বাহুতে। পরে নিকোলাস ওতামেন্দি ও মেসির সঙ্গে তিনি তুলে ধরেন ট্রফি।
লিওনেল স্কালোনির চোখে ফাইনালে দি মারিয়াকে মনে হয়েছে ২৫ বছরের প্রাণবন্ত এক যুবক। ম্যাচটিতে নিজে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ভীতি ছড়ানোর পাশাপাশি আক্রমণের সুরও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। নিচে নেমে মাঝে মধ্যে রক্ষণেও সহায়তা করতে দেখা গেছে তাকে। ম্যাচ জুড়েই প্রাণশক্তিতে ভরপুর ছিলেন দি মারিয়া।
দলের গোল করার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচের ৩ মিনিট বাকি থাকতে তাকে তুলে নেন স্কালোনি। অশ্রুভরা চোখে আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষবারের মতো মাঠ ছাড়েন দি মারিয়া। শেষটাও হলো তার দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে স্কালোনি বললেন, দি মারিয়ার ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচগুলোর একটি ছিল এটি।
“সে (দি মারিয়া) অসাধারণ অনেক ম্যাচই খেলেছে, কিন্তু আজকের ম্যাচটি ছিল তা সেরা ম্যাচগুলোর একটি। ভালো খেলার পাশাপাশি, যখন তার পা কাজ করছিল না ম্যাচের ওই সময়ও আক্রমণ করার মনোভাব ছিল তার এবং এমনভাবে সে দৌড়াতে শুরু করেছিল, যেন ২৫ বছরের যুবক। সে একজন কিংবদন্তি, তার মান বোঝানোর কোনো উপায় নেই। যেভাবে শেষ হয়েছে, তার গল্প যেন সিনেমার চিত্রনাট্য।”
লম্বা একটা সময় ধরে দি মারিয়ার সঙ্গে খেলছেন মিডফিল্ডার রদ্রিগো দে পল। দীর্ঘ দিনের সতীর্থের বিদায় এভাবেই প্রাপ্য ছিল বলে মনে করেন তিনি।
“দি মারিয়ার সঙ্গে খুব বিষণ্ণ সময় কেটেছে। একদিকে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বলে দুঃখ হচ্ছে, আবার অনেক আনন্দ নিয়ে যাচ্ছেন। যারা এভাবে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারে, তারা এটার জন্য আগে থেকেই মনোনীত। দুবারের লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও ওয়েম্বলিতে জয় দিয়ে বিদায় নিয়েছেন তিনি। সবকিছুই অর্জন করেছেন। অপেক্ষা সার্থক ছিল, তিনি একটি খুব বড় লেগাসি রেখে গেছেন।”