ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
সব মানুষই কখনও কখনও আবেগের কাছে আত্মসমর্পণ করে, রোনালদোর সেই কান্নার প্রসঙ্গে বললেন সতীর্থ বের্নার্দো সিলভা।
Published : 05 Jul 2024, 10:22 AM
পেনাল্টিতে ব্যর্থ হয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর কান্নায় কি ফুটে উঠেছে? প্রশ্ন, কৌতূহল, আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো বলেই হয়তো লোকের সবরকম প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বেশি। ইস্পাত-কঠিন দৃঢ়তার জন্যই যে তার পরিচিতি বেশি। সতীর্থ বের্নার্দো সিলভা এই ঘটনায় খুঁজে পেয়েছেন চিরন্তন সত্যের উপলব্ধি-দিনশেষে সবাই তো মানুষ!
স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে রোনালদোর সেই কান্নার ঘটনার পর কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও আলোচনা থামছে না। বিশেষ করে, ম্যাচের তখনও ১৫ মিনিট বাকি ছিল। রোনালদোর এভাবে ভেঙে পড়ায় বিস্ময়ের ঢেউ আছড়ে পড়েছে ফুটবল বিশ্বের নানা প্রান্তে।
সেই ধাক্কা সামলে পরে টাইব্রেকারে প্রথম শট রোনালদোই নিয়েছেন। গোল করেছেন। ম্যাচের পরে উল্লাসে মেতেছেন। কান্নার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু আলোচনা থামবার নয় সঙ্গত কারণেই, তিনি যে রোনালদো!
বের্নার্দো সিলভা এজন্যই হয়তো মনে করিয়ে দিলেন, রোনালদোও আবেগের কোলে ঢলে পড়তে পারেন অন্য সব মানুষের মতোই। ফ্রান্সের বিপক্ষে কোয়ার্টার-ফাইনাল লড়াইয়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিখ্যাত সতীর্থের ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন সিলভা।
“আমরা সবাই মানুষ। পেনাল্টিতে সুযোগ হাতছাড়া করে সে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিল। এটা পুরোপুরিই গ্রহণ করাই যায়, তাই না? কখনও কখনও লোকে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখায়… সে দলকে সহায়তা করতে মরিয়া থাকে এবং তার মনে হয়েছে, ওই মুহূর্তে আরও ভালো করা উচিত ছিল।”
“আমার মতে, পেনাল্টি শট খুবই ভালো ছিল, ওবলাক দারুণভাবে বাঁচিয়েছে। সে কিছুটা কান্না করেছে, সব মানুষই কখনও কখনও আবেগের এই স্রোত সামলায়। কাজেই এসব নিয়ে লোকের কথা বলার কারণ দেখি না। তারপরও অবশ্য লোকে করবেই এসব, কারণ এটাই ব্যবসা।”
‘ব্যবসা’ বলে অবশ্য ব্যাপারটিকে এড়িয়ে যাননি বা তাচ্ছিল্য করেননি সিলভা। বরং বাস্তবতা উপলব্ধি করেই নিজেদের জীবনের নানা দিক তিনি সাদরে গ্রহণ করে নিচ্ছেন।
“আমরা এটা বুঝতে পারি, আমরাও এই ব্যবসারই অংশ। এই কারণেই আমরা এত পয়সা আয় করি, নিজেদের পরিবার-পরিজনকে উন্নত জীবন উপহার দিতে পারি। এসব সমালোচনা নিয়ে তাই আমরা অভিযোগ করি না। ভালো হোক বা মন্দ, এটাই আমাদের কাজ।”
“এরকম জুন মাস যখন আসে, বিশ্বকাপ বা ইউরোর সময়, সবাই মনে করে সে নিজেই কোচ। আমরা তা বুঝতে পারি এবং মেনে নেই।”
রোনালদোকে নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা, পর্তুগালের পারফরম্যান্স নিয়ে এতটা কাটাছেঁড়া , এসব নিয়ে অভিযোগ করছেন না কোচ রবের্তো মার্তিনেসও।
“সমালোচনায় প্রমাণ হয়, জাতীয় দলকে নিয়ে লোকের আবেগ কতটা এবং আমার তা মনে নিতে আপত্তি নেই… আমাদের কাজের অংশই এটা।”
শুধু পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া করাই নয়, এবারের ইউরোতে রোনালদো এখনও পর্যন্ত কোনো গোল করতে পারেননি। তবে তার তাড়না, নিবেদন এবং দলে অবদান নিয়ে কোনো সংশয় নেই কোচের।
“এটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার যে, একজন ফুটবলার, যে কিনা সবকিছু জিতেছে, জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলা ও গোল করার সংখ্যাসহ অসংখ্য রেকর্ড যার আছে, সে এতটা তরতাজা ও চনমনে, এটা দারুণ বিস্ময়কর।”
“এরকম নিবেদিত একজন ফুটবলারকে যখন পাওয়া যায়, তার অতীতের কীর্তি সব ভুলে যান, এমনকি এই সময়েও তার নিবেদন যতটা, এটা দেখেই অসাধারণ লাগে।”