লা লিগা
দেপোর্তিভো আলাভেসকে কোনোমতে হারিয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমাল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
Published : 13 Apr 2025, 10:22 PM
আর্সেনালের মাঠে বিধ্বস্ত হওয়ার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে খেলতে নামা রেয়াল মাদ্রিদকে দেখা গেল না চেনা চেহারায়। তবে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার নৈপুণ্যে পেয়ে গেল গোল। মারাত্মক ফাউল করে কিলিয়ান এমবাপে লাল কার্ড দেখার পর তাদের অবস্থা দাঁড়াল সঙ্গীন। দ্বিতীয়ার্ধে দেপোর্তিভো আলাভেসের একজন লাল কার্ড দেখার পর অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টাল। ব্যবধান ধরে রেখে জয়ে ফিরল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
আলাভেসের মাঠে রোববার লা লিগার ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে রেয়াল।
লিগে আগের ম্যাচে গত সপ্তাহে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে হেরেছিল মাদ্রিদের দলটি। ওই ধাক্কার তিন দিন পর ইউরোপ সেরার মঞ্চে তারা আর্সেনালের বিপক্ষে হেরে যায় ৩-০ গোলে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকতে হলে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে আসছে ম্যাচে অবিশ্বাস্য কিছু ঘটাতে হবে রেয়ালের। এর আগে নিজেদের খুব ভালোভাবে মেলে ধরতে না পারলেও অন্তত জয়ে ফিরতে পারল দলটি।
ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যামদের বাইরে রেখে রেয়ালের খেলায় ছিল না চেনা ধার। প্রথম তিন মিনিটে দুটি সুযোগ তৈরি করে আলাভেস।
তৃতীয় মিনিটে কার্লেস আলেনার শট ব্লকড হয় রেয়ালের রক্ষণে। কয়েক সেকেন্ড পর আব্দেল আবকারের শট থাকেনি লক্ষ্যে।
নবম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় রেয়াল। কিন্তু ডি-বক্সে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি আর্দা গিলের। গোলরক্ষকের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে রেয়াল। তাতে সাড়া দেননি রেফারি।
চতুর্দশ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে কিকে গার্সিয়ার শট যায় রেয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার গ্লাভসে। চার মিনিট পর রদ্রিগোর শট ফেরান আলাভেস গোলরক্ষক।
১৯তম মিনিটে কর্নার থেকে হেডে জালে বল পাঠান রাউল আসেন্সিও। রেয়ালের জার্সিতে নিজের প্রথম গোলের উচ্ছ্বাসে মাতেন তরুণ গোলরক্ষক; কিন্তু ভিএআরে দেখে ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। ওই হেডের আগে আলাভেস গোলরক্ষককে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন আন্টোনিও রুডিগার।
নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রেয়াল এগিয়ে যায় ৩৪তম মিনিটে। ফেদেরিকো ভালভের্দের কাছ থেকে ডি-বক্সের একটু বাইরে বল পেয়ে গতিময় শটে পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন কামাভিঙ্গা।
দুই মিনিট পর সমতা প্রায় ফিরিয়েই ফেলছিল আলাভেস। একটুর জন্য বাঁকানো শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কার্লোস ভিনসেন্তে।
৩৮তম মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় রেয়াল। আন্তোনিয়ো ব্লাঙ্কোকে মারাত্মক ফাউল করে বহিষ্কার হন এমবাপে। শুরুতে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরে ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টে সরাসরি লাল কার্ড দেখান তিনি।
কার্লো আনচেলত্তির নিষেধাজ্ঞায় এই ম্যাচে রেয়ালের ডাগআউটে দায়িত্ব ছিলেন তার ছেলে দাভিদে আনচেলত্তি, ফাউলের রিপ্লে দেখে এমবাপের হঠকারিতায় হাত ছুঁড়ে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
রেয়ালের বেঞ্চে সতীর্থরা দেখাচ্ছিলেন কীভাবে লাথি মেরেছেন এমবাপে। এতে ব্লাঙ্কোর পা ভেঙে যাওয়াও অস্বাভাবিক হতো না।
ক্যারিয়ারে চতুর্থবার লাল কার্ড দেখলেন এমবাপে। আগের তিনবার দেখেছিলেন পিএসজির জার্সিতে।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর রক্ষণে গুটিয়ে যায় রেয়াল। সুযোগে তাদের চেপে ধরে আলাভেস। তবে বিরতির আগ পর্যন্ত গোলের ভালো কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একের পর এক আক্রমণে কিছু সুযোগ তৈরি করে আলাভেস। ৫০তম মিনিটে গার্সিয়া বেশ ওপর দিয়ে মেরে দলকে হতাশ করেন। পরের মিনিটে কার্লোস মার্তিনের শট ঠেকিয়ে ব্যবধান ধরে রাখেন কোর্তোয়া।
৬৩তম মিনিটে মাঠে আসেন ভিনিসিউস ও বেলিংহ্যাম। পরের মিনিটে গোল হজম করতে বসেছিল রেয়াল। তনি মার্তিনেসের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান কোর্তোয়া।
৭০তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আলাভেসও। ভিনিসিউসকে পেছন থেকে ফাউল করেন মানু সানচেস। ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
পরের মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে গতিময় শটে একটুর জন্য ঠিকানা খুঁজে পাননি ভালভের্দে।
৮৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন বেলিংহ্যাম। ওয়ান-অন-ওয়ানে ইংলিশ মিডফিল্ডার শট নেন গোলরক্ষক বরাবর।
৩১ ম্যাচে ২০ জয় ও ছয় ড্রয়ে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে রেয়াল। সমান ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।
৩০ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে আছে আলাভেস।