জুলিয়ানো সিমেওনের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ দিয়েগো সিমেওনে, তবে এটিও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ, সামান্যতম বাড়তি সুবিধাও দেওয়া হবে না ছেলেকে।
Published : 15 Apr 2025, 12:03 PM
বাবা যে দলের কোচ, ছেলে সেই দলের ফুটবলার। এসব ক্ষেত্রে একটু বাঁকা চোখে তাকানো বা প্রশ্ন তোলার লোকের অভাব থাকে না। তবে সেসব কিছুর অবকাশ রাখেননি জুলিয়ানো সিমেওনে। পারফরম্যান্সই কথা বলছে তার হয়ে। তার বাবাকেও তাই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি। এই মৌসুমে আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে জুলিয়ানোর যা পারফরম্যান্স, এতটা ভালো কিছু প্রত্যাশা করেননি বাবা দিয়েগো সিমেওনে নিজেও!
দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পথচলায় জুলিয়ানো চোখধাঁধানো এক গোল করেন সোমবার। লা লিগায় রেয়াল ভাইয়াদলিদের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ৪-২ গোলের জয় পায় আতলেতিকো।
ঘরের মাঠে আতলেতিকো পিছিয়ে পড়ে ২১তম মিনিটে পেনাল্টি গোলে। ২৫তম মিনিটে হুলিয়ান আলভারেসের পেনাল্টি সমতায় ফেরায় দলকে। মিনিট দুয়েক পরই জুলিয়ানোর গোলে তারা এগিয়ে যায়। বাঁ প্রান্তে উড়ে আসা বল বক্সের পাশে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে আরেকজনের পাশ দিয়ে বুলেট গতির শটে কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি। সামনে থেকেও কিছু করতে পারেননি গোলকিপার।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ভাইয়াদলিদ আবার গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায়। তবে ৭১তম মিনিটে আলভারেসের আরেকটি পেনাল্টি এগিয়ে দেয় আতলেতিকোকে। ৭৯তম মিনিটে আলেকসান্দার সরলথের গোলে নিশ্চিত হয় জয়।
আগের ম্যাচে সেভিয়ার বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে দারুণ জয়ের পর এবারও পেছনে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিততে পেরে উচ্ছ্বসিত কোচ দিয়েগো সিমেওনে। সেখানে এলো ছেলের গোলের প্রসঙ্গও।
“সেভিয়ার বিপক্ষে এমনটি হয়েছিল (পেছন থেকে ফেরা) এবং হলো আজকেও। পিছিয়ে পড়ার পর দলের সাড়া দেওয়া জরুরি ছিল। পেনাল্টি থেকে গোল হলো, পরপরই জুলিয়ানোর গোলটি এলো… পরে আমরা আবার কিছুটা মন্থর হয়ে পড়েছিলাম, তবে এরপর আমরা যেমন চেয়েছি, তেমনই হয়েছে।”
শুধু এই ম্যাচেই নয়, চলতি মৌসুমে জুলিয়ানোর পারফরম্যান্সকে বলা যায় এক ধরনের বিপ্লব। ২০১৯ সালে ক্লাবের যুব দলে যোগ দেন তিনি। ‘বি’ দল হয়ে মূল দলে অভিষেক ২০২২ সালে। পরে ধারে খেলেছেন দুটি ক্লাবে। দিয়েগো সিমেওনের ছেলে হিসেবেই তখনও ছিল তার মূল পরিচয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে তিনি আপন আলোয় উদ্ভাসিত। মৌসুমজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছেন ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
ছেলের এমন পারফরম্যান্স বিস্মিত করেছে বাবা দিয়েগোকে। তবে মুগ্ধতার পাশাপাশি বাবা জানিয়ে দিয়েছেন, ছেলে হিসেবে এক বিন্দু বাড়তি সুবিধাও দেওয়া হবে না জুলিয়ানোকে।
“সত্যি বলতে, ওর কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স আমি আশা করিনি, ভাবিনি এভাবে আমাদের সহায়তা করবে। এজন্যই আর সবার মতো স্রেফ সাধারণ ফুটবলার হিসেবেই ওকে স্কোয়াডে রেখেছিলাম।”
“সত্যিই সে অসাধারণ এক মৌসুম কাটাচ্ছে এবং আশা করি, এটা ধরে রাখতে পারবে। কেউ তাকে কোনো কিছু উপহার দেবে না এবং হাতে তুলে দেবে না। কেউ না। সে নিজেও তা জানে এবং অন্য সবার চেয়ে সে আমাকে সবচেয়ে বেশি চেনে।”
ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আতলেতিকোয় এসে চলতি মৌসুমে দারুণ খেলছেন আরেক আর্জেন্টাইন হুলিয়ান আলভারেসও। এই ম্যাচের দুই গোলের পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে তার গোল এখন ২৬টি।
তার পারফরম্যান্সেও খুশি কোচ। তবে তার কাছে কোচের চাওয়া আরও বেশি কিছু।
“হুলিয়ান দারুণ এক মৌসুম কাটাচ্ছে। এরকম একজন ফুটবলারই আমাদের প্রয়োজন ছিল, বিশেষ করে এমন মুহূর্তে, সেভিয়ার বিপক্ষে ও আজকে যেমন খেলেছে।”
“লিগে ১৪ গোল করেছে সে। তবে আমরা ওকে বলতেই থাকি যে, লেভানদোভস্কি আরও অনেক গোল করেছে (লিগে ২৫টি)।”