চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
পিএসজির আঙিনায় অ্যাস্টন ভিলার পোস্টে ত্রাতা হতে পারেননি বিশ্বকাপ জয়ী গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেস।
Published : 10 Apr 2025, 03:05 AM
আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে চুল রাঙিয়ে মাঠে নামলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। অবশ্য যে উদ্দেশ্যে এই আয়োজন, তিনি তা পূরণ করতে পারলেন না। লুসাইলের সেই ফাইনালের মতো পারলেন না বীর হয়ে উঠতে, আর্জেন্টিনার মতো অ্যাস্টন ভিলাকে জেতাতে। প্যারিসে পরাস্ত হলেন তিন বার। পিএসজির আঙিনা থেকে হার নিয়ে ফিরল তার দলও।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুধবার রাতে ভিলাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠার পথে এক পা বাড়িয়েছে পিএসজি।
কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে মর্গ্যান রজার্স সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার পর, পিএসজির হয়ে একে একে জালের দেখা পান দিজিরে দুয়ে, খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া ও নুনো মেন্দেস।
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে মার্তিনেসের বীরত্বে ফ্রান্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। পিএসজি-অ্যাস্টন ভিলা ম্যাচের আগে আলোচনার অনেকটা জুড়ে ছিল লুসাইলের সেই গল্প। মার্তিনেস সেখানে ফরাসিদের জন্য ছিলেন ‘শত্রু।’ পিএসজি সমর্থকদের কাছেও এ রাতে তিনি ছিলেন তাই। সেবার তিনি জয়ী, এবার পরাজিত।
বলের নিয়ন্ত্রণে একচ্ছত্র আধিপত্য দিয়ে শুরু পিএসজির, মার্তিনেসের পরীক্ষারও শুরু কিক অফের একটু পর থেকে। অষ্টম মিনিটে উসমান দেম্বেলের বুলেট গতির শট ফিস্ট করে প্রথম পরীক্ষায় উতরে যান তিনি।
একটু পর পিএসজি অধিনায়ক আশরাফ হাকিমির ৩৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট অনায়াসে আটকান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিলেও পিএসজি পাচ্ছিল না কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। বরং খেলার ধারার বিপরীতে ৩৫তম মিনিটে গোছালো প্রতি আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় ভিলা।
মাঝমাঠে পিএসজি এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে জন ম্যাকগিনের বল কেড়ে নেওয়া থেকে আক্রমণের শুরু। কয়েক পা ঘুরে বল যায় মার্কাস র্যাশফোর্ডের পায়ে। তার পাস ধরে ইউরি তিলেমানাস আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান, নিখুঁত ট্যাপে জালে জড়িয়ে দেন রজার্স। পিএসজি সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিয়ে এগিয়ে যায় ভিলা।
ভিলার এই আনন্দ অবশ্য টেকেনি বেশিক্ষণ। বাম দিকের বক্সের উপরে কিছুটা এগিয়ে জায়গা করে নিয়ে দৃষ্টিনন্দন বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন দুয়ে। কিছুই করার ছিল না মার্তিনেসের, স্রেফ চেয়ে-চেয়ে তিনি দেখলেন বলের জালে লুটোপুটি খাওয়া।
এর একটু আগেই অবশ্য কোনোমতে আত্মঘাতী গোল হজম করা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক।
এ অর্ধে বলের নিয়ন্ত্রণ পিএসজির ছিল ৭৪ শতাংশ। ১৫টি আক্রমণের ছয়টি লক্ষে রেখে একবার তারা পরাস্ত করতে পারে মার্তিনেসকে। বিপরীতে দুই শটের একটি থেকে গোল তুলে নেয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে সপ্তম স্থানে থাকা ভিলা। লিগ ওয়ানের টেবিলে শীর্ষে থাকা পিএসজির বিপক্ষে সমতার তৃপ্তি নিয়ে বিরতিতে যায় তারা।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকে ভিলার বক্সে ভীতি ছড়াতে থাকে পিএসজি। ইউরোপ সেরার মঞ্চে প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞ পিএসজির মুখোমুখি হওয়া ভিলা ৪৯তম মিনিটে পড়ে পিছিয়ে। কাছের পোস্ট দিয়ে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন কাভারাৎস্খেলিয়া। বলের লাইনে থাকলেও মার্তিনেস পারেননি ন্যুনতম প্রতিরোধ গড়তে।
৫৮তম মিনিটে হাকিমির শট আটকে ব্যবধান বাড়তে দেননি মার্তিনেস। কোণঠাসা ভিলার এ অর্ধের সেরা চেষ্টা ৭২তম মিনিটে, তবে রজার্সের শট ফিরিয়ে জানলুইজি দোন্নারুম্মা পিএসজিকে রাখেন জয়ের পথে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে আবারও পরাস্ত হন মার্তিনেস। সতীর্থের থ্রু পাস ধরে মেন্দেস দারুণ ডজে সামনে থাকা এক ডিফেন্ডার ও গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন।
আগামী বুধবার ফিরতি লেগে ভিলার মাঠে মুখোমুখি হবে দুই দল।