মিল্কিওয়ে’তে একটি ‘সুপার আর্থ’ থাকতে পারে, গবেষকরা এমন তথ্য প্রকাশের কিছুদিন পরই এ তুলতুলে গ্রহটির খোঁজ মিলল।
Published : 16 May 2024, 05:35 PM
সম্প্রতি জোতির্বিদরা এমন এক গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন, যা হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো ওজনে খুব ‘হালকা ও তুলতুলে’। এটি আকারে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চেয়েও বড় বলে দাবি তাদের।
‘ডব্লিউএএসপি-১৯৩বি’ নামের নতুন এই গ্রহটিকে ‘সুপার ফ্লাফি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর কারণ, গ্রহটির আকারের তুলনায় এর ঘনত্ব অনেক কম।
বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’তে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে, গ্রহটির সিংহভাগই হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম নিয়ে গঠিত বলে ধারণা করা হয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের খোঁজ পাওয়া দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ঘনত্বের গ্রহ এটি। তবে, বৃহস্পতির চেয়ে আকারে প্রায় ৫০ শতাংশ বড় হওয়ায় বিশেষজ্ঞদের কাছে এটি এখনও বড় রহস্য বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।
‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)’র প্রধান লেখক খালিদ বারকাউইয়ের মতে, ‘গ্রহটি মূলত সুপার ফ্লাফি’, কারণ এর বেশিরভাগ অংশই কঠিন পদার্থের পরিবর্তে হালকা গ্যাস দিয়ে তৈরি।
তবে, গ্রহটির ‘ফ্লাফি’ অস্তিত্ব ঘিরে তৈরি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগে এটি নিয়ে আরও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিশেষজ্ঞের এক অংশের মতে, ‘ডব্লিউএএসপি-১৯৩বি’ এতই হালকা যে এটি পানিতে ভাসতে পারে। আর সেটা কোনো গ্রহের গঠন ও বিবর্তন নিয়ে গবেষণার জন্য একেবারে আদর্শ।
সৌরজগতের বাইরের এ গ্রহটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১২ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, যেখানে এক আলোকবর্ষ নয় ট্রিলিয়ন কিলোমিটারের সমান। আর এটি সূর্যের মতোই একটি তারাকে প্রদক্ষিণ করে।
ধারণা করা হয়, গ্রহটির নিকটবর্তী সূর্যের তাপ, যা প্রতি ছয় দিন পরপর একে প্রদক্ষিণ করে, তা এর বায়ুমণ্ডলকে প্রসারিত করতে পারে।
মিল্কিওয়ে’তে একটি ‘সুপার আর্থ’ থাকতে পারে, গবেষকরা এমন তথ্য প্রকাশের কিছুদিন পরই এ তুলতুলে গ্রহটির খোঁজ মিলল।
“গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে সম্ভবত কার্বন ডাই অক্সাইড বা কার্বন মনোক্সাইড রয়েছে। তবে এতে জলীয় বাষ্প ও সালফার ডাই অক্সাইডের মতো গ্যাসও থাকতে পারে,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও নাসা’র ‘জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি’র বিশেষজ্ঞ রেনিউ হু।
“সম্প্রতিক পর্যবেক্ষণগুলোতে গ্রহটির সঠিক বায়ুমণ্ডলীয় গঠন শনাক্ত করা যায়নি।”
আর গ্রহটি ‘বসবাসেরও উপযোগী নয়’, কারণ তরল পানির অস্তিত্ব থাকার জন্য এর আবহাওয়া খুবই উষ্ণ বলে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা।