গোপালগঞ্জ সদরে সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে উপহারের ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার গোবরা গ্রামে ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও যশোর এরিয়ার কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ প্রধান অতিথি থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনদের কাছে চাবি হস্তান্তর করেন।
পরে বীর সেনা মুক্তিযোদ্ধা প্রাক্তন ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সিরাজুল হকের ঘরের ফলক উম্মোচন করেন প্রধান অতিথি। এ সময় বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
ঘর পেয়েছেন গোবরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সিরাজুল হক, একই উপজেলার ভোজেরগাতী গ্রামের গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্পোরাল আতাহার আলী, সুলতানশাহী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেন্ট অফিসার মো. বাকাদ্দেস মুন্সি, কাঠি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেন্ট অফিসার এসকে আকরাম এবং কাশিয়ানী উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স কর্পোরাল অতিয়ার হোসেন।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৯ নম্বর সেক্টরের হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। ২৮ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরির পর ১৯৮৭ সালে অবসরে যাই।
“অবসরে গেলে স্ত্রী ও ৬ সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আমাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। সেইসঙ্গে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছেন। এ জন্য আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারছি।”
নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনী আমাকে একটি ঘর করে দিয়েছে। শেষ জীবনটা স্বচ্ছন্দে কাটাতে পারব।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে নাদির আহম্মেদ বলেন, “সরকারপ্রধান আমাদের সহযোগিতা করেছেন; এ জন্য আমরা ভালো আছি।
“এখন সেনাবাহিনীর উপহারের ঘর পেলাম। ঘর দিয়ে সেনাপ্রধান আমাদের সম্মানিত করেছেন। তাকে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এ সময় বীর সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ বলেন, “আপনাদের অবদান এ জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। আপনাদের ত্যাগ ও সাহসিকতাকে সম্মানিত করতে সেনাপ্রধান আপনাদের গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
“সেই সূত্রধরে সেনা কল্যাণ তহবিলের অর্থায়নে ও ৫৫ পদাতিক বাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি গোপালগঞ্জে ৬ জন বীর সেনা মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।”
স্বাধীনতাযুদ্ধে সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের তুলনায় এ উদ্যোগকে ক্ষুদ্র উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আজ ঘরের চাবি তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মীরা ছিলেন।