নিজ বাসায় গুলিতে আহত হওয়ার তিন মাস পর নিহত নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ খানের (৭৫) জানাজা নামাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শিবপুরের মজলিশপুরের তার গ্রামের বাড়ির সামনের মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়।
পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
তার জানাজা নামাজে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।
জানাজার নামাজে নিহতের ভাতিজা ও নরসিংদী ২ (পলাশ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ, অপর ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান, ছেলে মো. আমিনুর রশীদ খান তাপস বক্তব্য দেন।
এ তাপস স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার বাবা হত্যার বিচার দাবি করেন, না হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।
এ সময় তিনি মামলার আসামিদের মদদদাতাদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার চাচা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক মাস চিকিৎসার পর গত ১৩ এপ্রিল ভারতের দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার একটি অস্ত্রোপচার শেষে গত ১ মে দেশে আনা হয়েছিল। এরপর গত ৭ মে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত ১৯ মে রাতে অবস্থার অবনতি হলে হারুন অর রশিদ খানকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকাল তিনি মারা যান।
উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ যেদিন গুলিবিদ্ধ হন তার দুদিন পর তার ছেলে মো. আমিনুর রশীদ খান তাপস বাদী হয়ে শিবপুর থানায় মামলা করেন।
এতে শিবপুরের পুটিয়া এলাকার আরিফ সরকারকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে এজাহারনামীয় দুজন। এজাহারনামীয়দের মধ্যে নূর মোহাম্মদ নামের একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এজাহারনামীয় প্রধান আসামিসহ চারজন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গত বুধবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিবপুর সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ গেইট বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় টায়ারে আগুন দেয়।
এ সময় তারা হারুন খানের উপর গুলির মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।