“যত বেশি ভোটে বিজয়ী করবেন, তত বেশি অর্থ বরাদ্দ এনে উন্নয়ন করতে পারব,” বলেন লিটন।
Published : 17 Jun 2023, 01:02 AM
বায়ুদূষণ কমানো ও পরিচ্ছন্নতার কারণে আলোচনায় আসা রাজশাহীর সদ্য সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে দেশের উত্তরের নগরটির জন্য পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার।
অবসরে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করে আসা সাবেক এ আমলা বলেছেন, “আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে- সেই বাংলা ভাইয়ের কথা, মনে আছে জঙ্গিবাদ, ফ্যাসিবাদের কথা; মনে আছে লুণ্ঠন আর অত্যাচারের কথা। আর সঙ্গে আরেকটি পথ, যেটি আমাদের খায়রুজ্জামান লিটন দেখিয়েছেন, সেটি উন্নয়নের পথ; সেটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন।
“তার (লিটন) পিতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্বপ্ন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন; ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত একটি বাংলাদেশ। তারই একজন সিপাহসালার হিসেবে আজকে খায়রুজ্জামান লিটন শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে রাজশাহীর সুনাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি রাজশাহীবাসীর জন্য পরীক্ষিত বন্ধু।”
শুক্রবার বিকালে সোনাদীঘি সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ওই পথসভায় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও বক্তব্য রাখেন।
কবির বিন আনোয়ার বলেন, “রাজশাহীকে নিয়ে আপনাদের সন্তান খায়রুজ্জামান লিটন অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন, যার আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের ভুল করলে চলবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
“আমি অনুরোধ করব- আপনাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে দলে দলে সবাই ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন, সকল ষড়যন্ত্রের জবাব হিসেবে খায়রুজ্জামান লিটনের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।”
রাজশাহীকে দেশের সুন্দরতম শহরের রূপ দেওয়ার পেছনে লিটনের ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বলেন, “জামায়াত-শিবির, আলবদর, ঘাতক, রাজাকার সব এক প্লাটফর্মে এসে আজকে বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে। সেইখানে যখন তারা ব্যর্থ হন, তখন তারা মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
“তাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড রাজনীতি, নিজের দেশকে হেয় করা, ছোট করা, নিজের দেশের মানুষের ক্ষতি করা, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করার বিপক্ষে আজকে খায়রুজ্জামান লিটন নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আপনারা দেখেছেন, আপনারা জানেন- এটি কোন গল্প নয়, এটি কোন রূপকথা নয়; এটি আমাদের চোখের সামনে রয়েছে যে আজকে রাজশাহী সারাবিশ্বের মধ্যে একটি পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর শহরে পরিণত হয়েছে।”
পথসভায় নৌকার মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “গত ৫ বছরের মধ্যে মাত্র আড়াই বছর কাজ করতে পেরেছি। কারণ করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছর সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশ অচল হয়েছিল। রাজশাহীও অচল হয়েছিল। তখন কোনো কাজ করতে পারিনি।
“সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নগরবাসীকে দফায় দফায় খাদ্য, নগদ অর্থ প্রদান, ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ, নির্মাণ সামগ্রী ও ডলার দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে আড়াই বছরে যে অল্প সময় কাজ করতে পেরেছি, তার উন্নয়ন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।”
তবে রাজশাহীতে কর্মসংস্থানের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “তেমন শিল্পকারখানা নেই। সরকারি কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। এবার কর্মসংস্থান দিতে চাই।
“প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিসিক শিল্পনগরী-২ নির্মিত হয়েছে। সেখানে ২৮৭টি প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা করা যাবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর থেকে শিল্পপতিদের নিয়ে এসে শিল্পকারখানা করব।”
লিটন বলেন, “যে নৌকা স্বাধীনতা এনেছে, যে নৌকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, যে নৌকা দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দিয়েছে, উন্নয়ন দিয়েছে- সেই নৌকাই পারে রাজশাহীর মানুষকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে।
“তাই কারও কথায় কান না দিয়ে ২১ জুন নৌকা মার্কাকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করুন। যত বেশি ভোটে বিজয়ী করবেন, তত বেশি অর্থ বরাদ্দ এনে উন্নয়ন করতে পারব।”
পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহসানুল হক পিন্টু, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, মহানগর জাসদের সভাপতি আবদুল্লাহ-আল-মাসুদ শিবলী, মহানগর ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়াম, রাজশাহী জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টু, পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলু, গুরুদাসপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদের, নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, নন্দীগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী, আদমদিঘী উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম রাজু, সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, দুপচাঁচিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান, সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান রবিন।