এ বছর জেলায় ৬৫২টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি।
Published : 22 Oct 2023, 06:52 PM
কুমারী পূজার মাধ্যমে শুরু হলো মহাঅষ্টমী। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবে মণ্ডপে মণ্ডপে নেমেছে দর্শনার্থীদের ঢল।
বাগেরহাট শহরের রামকৃষ্ণ আশ্রমে রোববার বেলা ১১টার দিকে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শত শত ভক্ত এতে অংশ নেন।
রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী গুরু সেবানন্দ বলেন, “কুমারী পূজা হল, জীবন্ত দুর্গা পূজা। সব নারীরাই ভগবতি দুর্গার এক একটি অংশ। কুমারী শুদ্ধতা, পবিত্রতা ও শান্তির প্রতীক। কুমারীকে পূজা করলে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়, সংকল্প সিদ্ধ হয়। ভক্ত তার কার্যে সিদ্ধিলাভ করেন।”
এদিকে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে ৫০১ প্রতিমা নিয়ে তৈরি শিকদার বাড়ির মণ্ডপে উপচেপড়া ঢল নেমেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ মণ্ডপে আসছেন ভক্তরা। ব্যতিক্রমী বিভিন্ন মণ্ডপগুলোর আয়োজন দেখে ভক্ত দর্শনার্থীরা দারুণ খুশি। এ ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।
সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি এর চার যুগের দেব-দেবীর ৫০১টি প্রতিমা দিয়ে সাজানো হয়েছে শিকদার বাড়ির মণ্ডপ। এর মধ্যে ত্রেতাযুগের ৬৫ ফুটের কুম্ভকর্ণের মূর্তি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয়। ধর্মের নানা দেব-দেবীকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে পরিচয় করাতেই তাদের এই আয়োজন।
পরিবার-পরিজন নিয়ে এই মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।
খুলনা ও বরিশাল থেকে পূজা দেখতে আসা দর্শনার্থী প্রিয়ন্তী পাল ও নবনিতা মূখার্জী জানান, শিকদার বাড়ির আয়োজন দেখে খুব ভালো লেগেছে। শিকদার বাড়ির দেব-দেবীর প্রতিমা দেখে শিশুরাও কিছু জানতে এবং শিখতে পারবে।
তারা আরও জানান, দুর্গা মা বছর বছর পৃথিবীতে আসেন। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য যেন শান্তি বিরাজমান থাকে। ঈশ্বর যেন সবাইকে ভালো ও সুস্থ রাখে।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি নিলয় ভদ্র বলেন, “সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জেলায় এ বছর ৬৫২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাগেরহাটের সবচেয়ে বড় পূজাটি হাকিমপুরের শিকদার বাড়িতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মহাসপ্তমীর দিন থেকেই পূজা মণ্ডপগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, “মহাঅষ্টমীতে সেই ভিড় আরও বেশি হচ্ছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে জেলার সব মণ্ডপেই কমবেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে উৎসবে অংশ নিতে পারে সেজন্য প্রশাসন পূজা উদ্যাপন পরিষদকে সহযোগিতা করছে।”
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপগুলোতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও নিয়মিত টহল দল টহল দিচ্ছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল মাঠে নিয়োজিত আছে। যাতে সবাই নির্ভয়ে পূজা উদ্যাপন করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।