“এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তদন্ত প্রতিবেদনে তা উঠে আসবে। “
Published : 24 Jul 2023, 07:36 PM
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে ছাত্রলীগের মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করে বলে জানান প্রো-ভিসি ড. মোস্তফা কামাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসনকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. নাজমুল হোসেন, শিক্ষক ড. মাসুদ রানা, রতন কুমার পাল এবং মো. ইয়াহিয়া বেপারী আকাশ।
এরই মধ্যে কাজ শুরুর করেছেন জানিয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কামাল হোসেন বলেন, “এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তদন্ত প্রতিবেদনে তা উঠে আসবে। প্রয়োজনে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকেও বিষয়টি জানাবো “
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের আশঙ্কা, এই কমিটি পক্ষপাতমূলক আচরণ করবে। তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষ ঘটনার শুরু থেকেই ছাত্রলীগের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস বলেন, “সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আমরা সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের অপকর্ম ও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করায় ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা আমাদের উপর চড়াও হয়। প্রক্টরিয়াল বডি কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা ছাত্রলীগকে ভয় পায় বলেই আজ ক্যাম্পাসে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।”
আহত দৈনিক নয়া শতাব্দীর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ও পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুনও তদন্ত কমিটির অবস্থান নিয়ে নিজের সংশয়ের কথা জানান।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন বলেন, “হামলাকারীদের বেশিরভাগেরই ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও তারা হলে অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি উন্নয়ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কাজ করছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল্লাহ করছেন। তাই তাদের বিপক্ষে যাবে এমন কোনো কাজ তদন্ত কমিটির সদস্যরা করবেন বলে আমার মনে হয় না।”
তবে এ বিষয়ে হামলার স্বীকার সংবাদকর্মীর সংশয়ের কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন প্রক্টর কামাল হোসেন। তার দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে।
কমিটির আরেক সদস্য ইয়াহিয়া বেপারী আকাশ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, আমরা সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জমা দেব। এখানে পক্ষপাতের কোনো সুযোগ নেই।”
প্রো-ভিসি ড. মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, তদন্ত যেন সঠিকভাবে হয়, সেদিকে তাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, ঘটনার পর থেকে সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব দুর্জয় কর্মকারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সমিতির আহ্বায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, “তাকেও মারপিট করে প্রক্টরিয়াল অফিসে বসিয়ে সাদা কাগজে কিছু লিখে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কোথায় আছেন কেউই বলতে পারছে না। ভয়ে হোক আর যে কারণেই হোক তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।”
আরও পড়ুন:
পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ