প্রক্টর বলেন, “বিষয়টি শুনে আগে তাকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পরে আমাদের নিকট লিখিত দিলেই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
Published : 23 Jul 2023, 08:16 PM
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াতে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন পাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস।
আহত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক নয়া শতাব্দীর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ও পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “রোববার দুপুর ২টার দিকে ক্যাম্পাসের এক সাংবাদিক সহকর্মীকে ক্যাফেটেরিয়াতে আটকে রাখার খবর পাই।
“এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ক্যাফেটেরিয়ার দিকে গেলে প্রথমে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাকে বলে, তুই কে? আমি পরিচয় দেওয়ার সাথে সাথেই তারা টেনে ভেতরে নিয়ে যায় এবং এলোপাথাড়িভাবে কিল-ঘুষিসহ পেটে লাথি মারতে থাকেন।”
এ সময় তার চিৎকারে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তারা তাকে ফেলে রেখে ক্যাফেটেরিয়ার উপর তলায় চলে যান। পরে তার সহকর্মী ও বন্ধুরা উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন বলে জানান এই সাংবাদিক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্ত, সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, সাবেক প্রচার সম্পাদক একরামুল ইসলাম সাগর ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আহমেদ হৃদয়, ছাত্রলীগ কর্মী জহুরুল ইসলাম পিয়াসসহ তার দলবল এই মারপিট করেন।”
এ ব্যাপারে পাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের অপকর্ম ও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা এই হামলা করেছেন বলে ধারণা করছি।
এই হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে তিনি বলেন, “তারা বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশ হলেই ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন। এর আগে মাদক নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তারা আমাদের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হন। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বসে সমঝোতা করে দেন।”
সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক আরও অভিযোগ করে বলেন, “এ ঘটনার পর সমিতির সদস্যসচিব দুর্জয় কর্মকারকে ছাত্রলীগ ডেকে নিয়ে গেছে। তাকে আমরা ফোনে পাচ্ছি না।”
অভিযোগের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্তর সঙ্গে মোবাইলে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহ বলেন, “আমি গ্রামে আসছি বিষয়টি জানা নেই, তবে এরা আমার সঙ্গের নয়।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, “কোনো সাংবাদিককে মারপিটের ঘটনা আমার জানা নেই, তবে সাংবাদিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এমনটি হতে পারে।”
প্রান্তরা তার সঙ্গে রাজনীতি করলেও তারা মাদকের সঙ্গে জড়িত নন বলেও দাবি ছাত্রলীগ সভাপতির।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবির প্রক্টর কামাল হোসেন বলেন, “আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মারপিট করার বিষয়টি শুনে আগে তাকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পরে আমাদের নিকট লিখিত দিলেই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, “সাংবাদিককে মারধরের বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তারা থানায় একটি লিখিত দেবেন বলেও জানিয়েছেন।”