মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানিয়েছে রাজশাহীবাসী।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ তার শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত রাজশাহী কলেজ চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে শহীদ মিনারের সামনে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, ভাষা সৈনিক মোশারফ হোসেন আখঞ্জি।
পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বক্তব্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “গোলাম আরিফ টিপু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাষা আন্দোলন করেছেন, রাজশাহীতে দেশের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
“আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে দিনের পর দিন অবিচল থেকে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, “তিনি শুধু রাজশাহীর নয়, সারাদেশের সম্পদ। তার মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তাকে অনুসরণ করতে পারলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।”
পরে সেখানে অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নান।
এর আগে সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি ঈদগাঁ মাঠে গোলাম আরিফ টিপুর আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ রানীহাটি থেকে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়।
রাজশাহীতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান গোলাম আরিফ টিপু।
৯৩ বছর বয়সী জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
গোলাম আরিফ টিপু বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান।