বাদীর দাবি, সৌমেন তথ্য জালিয়াতি করে জামিন নিয়েছিলেন।
Published : 18 Oct 2023, 07:20 PM
কুষ্টিয়ার চাঞ্চল্যকর মা ও শিশুসহ তিন খুনের ঘটনায় জামিন নিয়ে পলাতক হয়েছেন চাকরিচ্যুত এএসআই সৌমেন রায়।
উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের জামিনের পর টানা সাত বিচারিক দিবসে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সৌমেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করে বিচারক।
এরপর নয় মাসেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনুপ কুমার নন্দী বলেন, “সৌমেন উচ্চ আদালত থেকে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর অন্তবর্তীকালীন জামিন পান। পরে ২৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে বেলবন্ড দাখিল করে কারামুক্ত হন।
“এরপর থেকে তিনি পলাতক। মামলাটির সাক্ষ্য-শুনানি শেষ; ১৩ নভেম্বর যুক্তিতর্কের দিন রয়েছে।”
২০২১ সালের ১৩ জুন দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড়ে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় সৌমেন রায়কে আটক করে জনতা পুলিশে দেয়।
নিহতরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের বাসিন্দা মেজবার খানের ছেলে বিকাশ কর্মী শাকিল খান (২৮), নাথুরিয়া বাশগ্রামের বাসিন্দা আমির আলীর মেয়ে আসমা খাতুন (৩৪) এবং আসমার ছেলে রবিন (৭)।
সৌমেনের (৩৪) বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসবা গ্রামে। সবশেষ তিনি খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তারা গ্রামের বাড়ি থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছিল, সৌমেন দাবি করেছিলেন আসমা তার স্ত্রী। অপরদিকে আসমার পরিবার থেকে জানানো হয়েছিল, সৌমেন আসমা খাতুনের তৃতীয় স্বামী; নিহত শিশু রবিন আসমার প্রথম স্বামীর সন্তান।
এ ঘটনার পর আসমার মা কুমারখালী উপজেলার নাথুরিয়া গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে সৌমেনকে একমাত্রও আসামি করে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানায় মামলা করেন। সৌমেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
জামিন নিয়ে সৌমেনের পলাতক হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাদী হাসিনা খাতুন বলেন, “আমি এই মামলা সম্পর্কে ম্যালা লোকের সাথে কথা বলিচি, সবাই বলেচে, এই মামলায় কোনো ভাবেই জামিন হয় না। তাহলি কোর্ট জামিন দিলো কিভাবে?
তার দাবি, সৌমেন তথ্য জালিয়াতি করে জামিন নিয়েছিলেন। তিনি আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
কুষ্টিয়া সদর থানার আদালত পুলিশের এসআই ইস্কান্দার হোসেন বলেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে ইস্যু করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদালতের ডাক প্রেরণ শাখা হতে সরাসরি আসামির স্থায়ী ঠিকানা ও কর্মস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
“পরোয়ানা পাওয়ার পর তা তামিলের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানার। এ সংক্রান্ত কোনো নথি বা তথ্য কোর্ট জিআরও অফিসে থাকে না।”
কুষ্টিয়ায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা: আটক এএসআই বরখাস্ত
কুষ্টিয়ায় ‘স্ত্রী-ছেলেসহ’ তিনজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক