ঝিনাইদহে ৩ শিশুকে পুড়িয়ে হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি কম্পিউটার ও মোবাইলে কার্টুন দেখানোর কথা বলে তিন শিশুকে নিজের ঘরে ডেকে নেন ইকবাল ।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2023, 09:58 AM
Updated : 15 March 2023, 09:58 AM

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় দুই ভাইপো ও এক ভাগ্নেকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় একজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। 

বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের জেলা ও দায়রা জজ মো. নাজিমুদ্দৌলা এ দণ্ডাদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (পিপি) ইসমাইল হোসেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত ইকবাল হোসেন শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের গোলাম নবীর ছেলে। মামলাটির একমাত্র আসামি ইকবাল পলাতক আছেন। 

মামলার নথির সূত্রে পিপি ইসমাইল জানান, ইকবাল সিঙ্গাপুর থাকতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরে আসার পর বাবা গোলাম নবীর সঙ্গে টাকা সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে তার বিরোধ হয় । 

এই পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ইকবাল কম্পিউটার ও মোবাইলে কার্টুন দেখানোর কথা বলে ভাতিজা মোস্তফা সাফিন (৯), মোস্তফা আমিন (৭) ও ভাগ্নে মাহিন হাসানকে (১২) নিজের ঘরে ডেকে নেন। 

এরপর তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন এবং ঘরে আটকে রেখে গ্যাসের সিলিন্ডার খুলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই সাফিন ও আমিন দগ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহিন। 

প্রথম শ্রেণির ছাত্র আমিন ও তৃতীয় শ্রেণির সাফিন ছিল ইকবালের ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। আর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মাহিন ছিল রাশেদুল হাসানের ছেলে। 

এ ঘটনায় পরদিন দেলোয়ার বাদি হয়ে শৈলকুপা থানায় তার বড়ভাই ইকবালের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। 

৫ জানুয়ারি দুপুরে ঝিনাইদহের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল মতিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ইকবাল। 

এরপর ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত শেষে এসআই এমদাদুল হক একমাত্র আসামি ইকবালের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার আদালত তিন শিশুকে হত্যায় ইকবালকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তিন লাখ টাকা জরিমানার রায় দেয়। 

ঘটনার দিন ইকবালকে বাসার ছাদ থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল স্থানীয়রা। তবে বিচার চলাকালে জামিন নেওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন বলে জানান পিপি ইসমাইল হোসেন।