অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ ও ভাংচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার ৯টি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকালে কারখানাগুলির সামনে বন্ধের নোটিশও সাঁটিয়ে দেয়া হয়েছে।
সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখান করে বৃহস্পতিবার গাজীপুরে তিনটি এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের হামলা-ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দিনভর উত্তপ্ত ছিল নগরীর কয়েকটি এলাকা।
এ সময়ে শ্রমিকরা কোনাবাড়ি এলাকায় তুসুকা নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কারখানার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা পুলিশের তিনটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ২২টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে নয়টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে কোনাবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তুসুকা কারখানা। সেই কারখানার সামনে সাঁটানো হয়েছে একটি বন্ধের নোটিশ।
নোটিশে পরবর্তী কাজের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, ভুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড এবং নিডেল আর্ট এমব্রয়ডারি লিমিটেড এই পাঁচটি কারখানার সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
ওই কারখানার মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন জানান, পরবর্তীতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে শ্রমিকদের জানিয়ে দেয়া হবে।
এ ছাড়া কোনাবাড়ি আমবাগ রোডের এমএম নীটওয়্যার লিমিটেড ও কোনাবাড়ি জরুন এলাকায় এক নারী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ইসলাম গ্রুপের তিনটি কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ জোন-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুরের কোনোবাড়ি ও আশপাশের এলাকার ২২টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করার খবর তাদের কাছে রয়েছে।
বেতন বাড়ানোর দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে মজুরি বোর্ডে বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা করা হলে সেটি প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন।
এতে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র্যাবের একাধিক টহল টিম কাজ করে।
তবে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কোথাও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন