হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিবউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন।
সাক্ষ্য দিয়েছেন সোনারগাঁ থানার তৎকালীন এএসআই বোরহান দর্জি ও ওবায়েদ হোসেন। সাক্ষ্য শেষে তাদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী।
পিপি রকিবউদ্দিন জানান, ধর্ষণের অভিযোগে করা এই মামলায় সপ্তম দফায় এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর আগে এক পুলিশ পরিদর্শক ও এএসআই সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া মামলার বাদী, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহাগ রনি, সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের অভ্যর্থনা কক্ষের (রিসিপশন) কর্মী মাহবুবুর রহমান ও আনসার সদস্য মো. ইসমাইলসহ ১৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৪৩ জন।
এদিকে মামলাটি ‘সাজানো’ দাবি করে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, “সাক্ষীদের আমরা জেরা করেছি। তাদের কথাবার্তা এলোমেলো পাওয়া গেছে। ন্যায়বিচার পেলে মামুনুল হক বেকসুর খালাস পাবেন।”
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম শেষে দুপুরে তাকে পুনরায় কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
গত বছরের ৩ এপ্রিল বিকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় লোকজন। তখন ওই নারীকে নিজের বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল।
ঘটনা জানাজানি হলে সন্ধ্যায় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা ওই রিসোর্ট ঘেরাও করেন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকা অবস্থায় মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।
পরে রাতভর সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন উত্তেজিত হেফাজত কর্মীরা। ওই ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
ঘটনার প্রায় মাসখানেক পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে মামুনুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন তারই দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা ওই নারী।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন মাওলানা মামুনুল হক। তাদের আইনত বিয়ে হয়নি।
এই মামলায় গত বছরের ৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়।
এর আগে ১৮ এপ্রিল ঢাকায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: