পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী স্বরসতীর আরাধনায় মুখর ছিল বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন।
Published : 14 Feb 2024, 06:28 PM
ঊষার নির্মল স্নিগ্ধতায় বুধবার বসন্ত এসেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদিন ভিন্ন ভিন্ন আমেজের উৎসবের ঘনঘটায় এই শিক্ষাঙ্গনের প্রতিটি কোন সেজেছে রঙিন সাজে।
বুধবার ৩৪ বছরে পদার্পণ করে দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা মেতেছেন বসন্ত দিবস ও ভালোবাসা দিবসের উদযাপনেও।
পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী স্বরসতীর আরাধনায় মুখর ছিল বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন। এছাড়াও এদিন ক্যাম্পাস সেজেছিল শিক্ষার্থীদের এক সংগঠনের যুগপূর্তির আয়োজনে।
এভাবেই বুধবার দিনব্যাপী স্বতন্ত্র নানা উৎসবের বিভিন্ন কর্মসূচিতে হাস্যোজ্জল ক্ষণ কাটিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সকালেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বেলুন উড়ানো ও কেক কাটা হয়।
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ব্রিটিশ আমল থেকে সিলেট অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য যারা সংগ্রাম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় গুণগত মান বজায় রেখে তারা কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আশা করি, বিশ্বের কাছে এ বিশ্ববিদ্যালয় একদিন রোল মডেল হবে। শিক্ষা, গবেষণা আর উদ্ভাবন সাফল্যে হবে জয়জয়কার।”
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কবির হোসেন বলেন, “৩৪ বছরে অনেক সংকটই আমরা পাড়ি দিয়েছি। বর্তমান সংকটগুলো ঘুচিয়ে সামনের দিনে বিশ্ববিদ্যালয় আরও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।”
এজন্য সকল অংশীদারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
এদিকে, সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন বিভাগ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ৩২টি পূজামণ্ডপ বানান হয়। সকাল থেকেই মণ্ডপগুলোয় দেবীর অর্চনায় ব্যস্ত সময় কাটান সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে ‘বসন্ত বরণ’ উৎসবের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্বপ্নোত্থান’ ও নাট্যসংগঠন ‘থিয়েটার সাস্ট’।
স্বপ্নোত্থানের সভাপতি আব্দুল্লা আল সাইফ জানান, এ উপলক্ষ্যে বানানো টেন্টগুলো নান্দনিকভাবে সাজিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাখা হয়েছে পিঠা-পুলি, মিষ্টি, ফুলের তোড়া ও বসন্তের রঙে নিজেকে সাজানোর নানা অনুষঙ্গ।
এমনকি এই উৎসবের সঙ্গে আরেকটি বিষয়ও জড়িত আছে বলে জানান স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের সংগঠনের এই সভাপতি। তিনি জানান, ‘বসন্ত বরণ’ উৎসবের লভ্যাংশ ব্যয় করা হবে সহপাঠীর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসায়।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ক্যারিয়ার ক্লাবের’ এক যুগ পূর্তি উপলক্ষেও বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় বলে জানান সংগঠনটির সদস্য আফসানা ইসলাম শিফা।
সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজে দিনটি অন্যরকম ছিল উল্লেখ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘শেষ বর্ষের এমন আয়োজন আবেগ আপ্লুত করেছে। গত কয়েক বছর উৎসবে ভাটা পড়েছিল। তবে এবার পুরোটাই ভিন্ন চিত্র।
“আশা করি, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে এসব উৎসব আয়োজন ইতিবাচক সাড়া ফেলবে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, “শীত কাটিয়ে ক্যাম্পাসে ঝরাপাতার দিন আসছে। বসন্তের আগমনে শাবি যেন উৎসবের শিক্ষাঙ্গনে পরিণত হয়েছে। নতুন অনেক কিছুই শিখছি, উপভোগ করছি।”