“শুনেন, আমাদের দেড় লাখ ভোট। এর মধ্যে চা বাগান আর হিন্দু সম্প্রদায়। উনারা তো সবসময় আমাদের নৌকায় দিয়ে আসছেন। এইবার উনারা কেন দেন নাই?”
Published : 11 Jan 2024, 12:35 PM
বিগত তিন দশকে ছয়টি সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বাইরে কেউ জয়ের মুখ দেখেনি। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচিত মুখ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
শিল্প-কারখানা ও চা বাগান অধ্যুষিত চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তিনটি (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১) নির্বাচনের ভোটের অংক বলছে, এখানে বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান থাকে ১৫ থেকে ২০ হাজার।
এই জয়-পরাজয়ে ২৪টি চা বাগানের ভোট বড় ভূমিকা রাখে। কেন্দ্রভিত্তিক ভোটের হিসাবে দেখ যায়, চা বাগানগুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা সবসময় একচেটিয়া ভোট পেয়ে এসেছেন।
এবার আওয়ামী লীগের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সুমন প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন। মাহবুব একাদশ সংসদ নির্বাচনে আড়াই লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থীকে।
অর্থাৎ, এবার শুধু চা বাগানের কেন্দ্রগুলো নয়, এর বাইরের কেন্দ্রগুলোও বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে ব্যবধান গড়ে দিতে ভূমিকা রেখেছে।
সুমনের পৈত্রিক বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলায়, আর মাহবুব আলীর মাধবপুরে। সুমন দুই উপজেলাতেই বড় ব্যবধানে মাহবুবকে পেছনে ফেলেছেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, এ আসনে ভোটার ৫ লাখ ১২ হাজার ৩০৮। ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৯ জন।
এর মধ্যে সায়েদুল হক সুমন ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব আলী পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
স্বাভাবিকভাবেই মিডিয়ায় পরিচিত মুখ সুমনের এই জয় নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তির দাপটের এই সময়ে ভোটের রাজনীতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব এবং রাজনীতিবিদদের সোশাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয়ে ওঠার বিষয়টিও আলোচিত হচ্ছে।
বাগানে ‘ঈগলের’ হানা
এই আসনে ছোট-বড় মিলে মোট ২৪টি চা বাগান রয়েছে। এসব বাগানের ভোট প্রায় ৮০ হাজার। প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে চা শ্রমিকদের ভোট নৌকায় পড়ে। তবে এবারের নির্বাচনে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে।
হিসাব বলছে, ২৪টি বাগানের ১৫টি ভোটকেন্দ্রে ২৪ হাজার ২৮৭ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে সায়েদুল হক সুমন পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭২০ এবং মাহবুব আলী পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৬৭ ভোট।
একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই ১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০টির তুলনামূলক ভোটের হিসাব দেখলেই বোঝা যাবে, নৌকার ‘বাগান’ কীভাবে তছনছ করে দিয়েছে সুমনের ঈগল।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন | একাদশ সংসদ নির্বাচন | |||
কেন্দ্র | ঈগল | নৌকা | নৌকা | ধানের শীষ |
ঘনশ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১০৪১ | ১১১৮ | ২১৮৪ | ৫২ |
আড়ংবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১০৫৩ | ৪৫৩ | ১৯৫১ | ১৫ |
নালুয়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১০৫৭ | ৪৬৮ | ১৭৫২ | ২৫ |
চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১০৫১ | ১৮২৩ | ৩২২১ | ৬১ |
চণ্ডিছড়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১২৮০ | ৭৪০ | ২০১৪ | ১১৯ |
দেউন্দি চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় | ৭৭১ | ৯৩৫ | ১৮৫৭ | ৫১ |
লস্করপুর চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র | ৯৯৩ | ১০৪২ | ২২৮৯ | ৯ |
লালচান্দ বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ৭২৪ | ১০৩২ | ২২৫৪ | ৪৯ |
কাপাই চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যাল | ৭১৯ | ৩৫০ | ১২৭৭ | ৬ |
শানখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১২০৬ | ১৫৫ | ১৩৫২ | ২৯৮ |
মোট | ৯৮৯৫ | ৮১১৬ | ২০১৫১ | ৬৮৫ |
এই দশ কেন্দ্রে মাহবুব আলীর নৌকা একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ২০ হাজার ১৫১ ভোট পেয়েছিল, তার প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬৮৫ ভোট। দ্বাদশে মাহবুব আলীর নৌকার ভোট কমে হয়েছে ৮ হাজার ১১৬; তাকে ডিঙিয়ে সুমনের ঈগল ৯ হাজার ৮৯৫ ভোট পেয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছিলেন, “শুধু চা বাগান নয়, প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে এভাবে নৌকার ভোট চলে গেছে ঈগলের বাক্সে। মাধবপুর মাহবুব আলীর বাড়ি; কিন্তু এই উপজেলাতেও তাকে শোচনীয়ভাবে হারতে হয়েছে। এক লাখ ভোটের ব্যবধান বড় ব্যবধান।”
ভোটের হিসাব বলছে, নিজের উপজেলা চুনারুঘাটে সুমন পেয়েছেন ৯৭ হাজার ৭৯৫ ভোট, আর মাহবুব পেয়েছেন ২৪ হাজার ৮৯০ ভোট। অপরদিকে মাহবুব তার নিজের উপজেলা মাধবপুরে পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৬৫৩ ভোট, আর সুমন পেয়েছেন ৭১ হাজার ৩০৪ ভোট।
অনেক ভোটার এমনও বলেছেন, সুমন যাই করেছেন সেটা প্রচার করেছেন, অন্যদের জানিয়েছেন। তিনি যে এলাকায় প্রায় অর্ধশত কাঠের সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন, তা তিনি সারাদেশেই জানাতে পেরেছেন।
বন্যার সময় মানুষকে ঘর করে দিয়েছেন সেটাও সবাই জানে। এটা তরুণদের আকৃষ্ট করেছে। জাতীয়ভাবে পেশাদার লীগে তার ফুটবল দল না থাকলেও ‘ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি’র নাম কিন্তু সবাই জানে। এগুলো তাকে জয় পেতে সাহায্য করেছে।
মজুরির আন্দোলনে ছিলেন সুমন
দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত বছর অগাস্টে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের ২৪১টি চা বাগানের প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন।
শ্রমিকরা যখন আন্দোলনে ছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই তারা দৈনিক মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেই অভাবের দিনগুলোতে সুমন তাদের পাশে ছিলেন বলে অনেক শ্রমিক জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, “ইউনিয়ন ও উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক ছাড়া ভোট দিয়ে শ্রমিকদের অভ্যাস হয়েছে। এছাড়া এবারের সংসদ নির্বাচনে ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য চা শ্রমিকদের মন কেড়েছে। পরে তিনি কতটুকু কাজ করবেন শ্রমিকরা সেটা দেখেননি। তার বক্তব্য শুনেই অনেকে তাকে ভোট দিয়েছেন।”
চণ্ডিছড়া চা বাগানের শ্রমিক অমল ঘোষ বলেন, “আমরা সব সময় নৌকায় ভোট দিই। এবার নির্বাচনে মাহবুব আলী ও ব্যারিস্টার সুমন দুজনই আওয়ামী লীগের কর্মী। আমরা মাহবুব আলীকে আমাদের কোনো কাজে পাই নাই। কিন্তু সুমন ভাইকে আমরা বিভিন্ন সময় কাছে পেয়েছি। তাই সুমন ভাইকে এবার ভোট দিয়েছি।”
একই কথা বলেন এ বাগানের শ্রমিক গোলাপ বাউরি।
চা শ্রমিক নাজমা বেগম বলেন, “আন্দোলনের সময় সুমন আমাদের খাবার কিনে দিয়েছেন। এবার ভোট দিয়ে তার ঋণ পরিশোধ করলাম।”
নালুয়া চা বাগানের শ্রমিক রাজেশ বৈদ্য বলেন, “ব্যারিস্টার সুমন শ্রমিকদের সুবিধার জন্য ব্রিজ নির্মাণ করে দিয়েছেন। চাল কিনে দিয়েছেন। আমরা তো খেটে খাওয়া মানুষ, আমরা বিপদের সময় যাকে কাছে পাই সেই আমাদের আপনজন।”
দেওরগাছ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া বলেন, “সুমন ভাই নিজের টাকা খরচ করে ৪৯টি ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন।”
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সাবেক নেতা সুমন নিজে একভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন।
ভোটে জয় পাওয়ার পর সেই রাতে চুনারুঘাটে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “চা বাগানের মানুষ আমারে ক্যারে ভোট দিত? এরা নৌকার রিজার্ভ ভোট। এরার (শ্রমিক) কাছ গিয়া এরার (নৌকার প্রার্থী) চাওন লাগছে, চা বাগানের কাছ। এর চেয়ে শরম আছেনি। শুনেন, আমাদের দেড় লাখ ভোট। এর মধ্যে চা বাগান আর হিন্দু সম্প্রদায়। উনারা তো সবসময় আমাদের নৌকায় দিয়ে আসছেন। এইবার উনারা কেন দেন নাই? কারণ, জ্বালাই ফেলছেন উনারা।”
এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে সায়েদুল হক সুমন বলেন, “আমি সব সময় চেষ্টা করেছি সাধারণ মানুষের পাশে থাকার। নিজের সাধ্যানুযায়ী মানুষের সেবা করেছি। তাই মানুষ আমাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছে। মাহবুব আলী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই মানুষের পাশে ছিলেন না। তিনি ইচ্ছে করলে মানুষের জন্য অনেক কিছু করতে পারতেন।”
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহবুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে নৌকার সমর্থক ও চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী বলেন, “নৌকাকে বিজয়ী করতে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু জয়ী করতে পারিনি। চা শ্রমিকদের ভোট ছিল আমাদের ভরসা। কিন্তু বাগানের শ্রমিকরাও এবার নৌকায় ভোট দেয়নি।”
সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে ‘পজিটিভ ইমেজ’
ব্যারিস্টার সুমন তার ফেইসবুক প্রোফাইলে পরিচয় লিখেছেন ‘ডিজিটাল ক্রিয়েটর’। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কাজের কথাও লিখেছেন। ফেইসবুকে সবসময় সরব উপস্থিতি তাকে রীতিমত ‘সেলিব্রেটি’র মর্যাদা দিয়েছে।
প্রায় এক দশক ধরে সমাজের নানা অনিয়ম-অসংগতি নিয়ে ফেইসবুক ও ইউটিউবে সরব সুমন। দুই মাধ্যমেই তার লাখ লাখ অনুসারী।
রাজনীতিবিদরা অনেকেই এখন জনমত তৈরি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জনগণকে জানাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন। কিন্তু ‘ফেইসবুক সেলিব্রেটি’ সুমনের রাজনৈতিক বিজয়কে গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা একটি ‘নতুন মাত্রা’ হিসেবে দেখছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো বাংলাদেশে বড় একটা প্ল্যাটফর্ম; এখানে সবাই যার যার মতামত দিতে পারে। ব্যারিস্টার সুমন আমাদের সমাজের চারপাশের ঘটনাগুলো সামনে এনেছেন, যার ফলে উনার অনেক ফলোয়ার হয়েছে। উনার একটা ইমেজও তিনি দাঁড় করাতে পেরেছেন। অনেক ইতিবাচক বিষয়কেও সামনে এনেছেন।
“ফেইসবুকে লাইভ করা, সমাজের নানা অসঙ্গতি, নানা ধরনের যে বিষয়গুলো থাকে আমাদের সেগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে এগুলো মানুষের সামনে আনা এবং অনেক বিষয়ে আমাদের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং এটার একটা সুফল কিন্তু সাধারণ জনগণ পায়। ফলে ওইগুলোর কারণে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।”
আশরাফুল আলম বলেন, “উনাকে কিন্তু পাবলিক ফিগার হিসেবে সারাদেশের জনগণ চিনেছে। দেশে তো অনেক ব্যারিস্টারই আছে। কিন্তু ‘ব্যারিস্টার সুমন’ নামে উনার যে ইমেজ দাঁড়িয়েছে ওইটা লাইভ করার কারণেই সম্ভব হয়েছে। সেই জায়গা থেকে উনাকে অনেকে পছন্দ করেন হয়ত।”
নির্বাচনের প্রচারের সময় ব্যারিস্টার সুমন প্রমিত বাংলায় বক্তব্য না দিয়ে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছেন- সেটা জনগণের সঙ্গে তার ‘সেতুবন্ধ’ তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গবেষক ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্ড কলেজের ভিজিটিং অধ্যাপক ফাহমিদুল হক।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের ফল গণনায় আমার পূর্ণ আস্থা নেই। যদি ব্যারিস্টার সুমনের জয়লাভের বিষয়টি সঠিক হয়ে থাকে, তবে বলতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার যে ইমেজ, এ হল তার ধারাবাহিকতা। তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে তার এক ধরনের রাজনৈতিক আত্মসমালোচনা দেখা যেত। যেখানে সবাই একচোখা দলীয় কথাবার্তা বলেন, তিনি কিছুটা ব্যতিক্রম অবস্থা নেন।
“এ ছাড়া নির্বাচনপূর্ব গণসংযোগে জনবক্তা হিসেবে তার কিছু কৌশল কাজে দিয়েছে। যেমন স্থানীয় ডায়ালেক্টে কথা বলা।”
তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রাইসুল ইসলাম মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবক থেকে একজন সংসদ সদস্য হওয়া সহজ-সরল বিষয় নয়।
হবিগঞ্জ-৪: নৌকা ও ঈগলের লড়াইয়ের নির্ণায়ক চা শ্রমিক
ভোটে জিতে ‘মনের ময়লা’ পরিষ্কারের আশ্বাস ব্যারিস্টার সুমনের
ব্যারিস্টার সুমন জিতলেন লাখ ভোটের ব্যবধানে
“এতে অবশ্যই তার মূল পেশাগত দক্ষতা, ব্যক্তিগত অর্জন ও প্রতিষ্ঠা নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করেছে। আবার এটাও ঠিক, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন প্রভাবক; তাই প্রশ্নাতীতভাবে তার অন্যদের চেয়ে যোগাযোগ দক্ষতা কিছুটা বেশি থাকবে।
“তার মানে এই নয় যে, এখন সবাই সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন দেখবে। স্বপ্ন দেখা মন্দ নয়, কিন্তু এখানে যেহেতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম; তাই অনেক সময় এখানে বাস্তবতার ধারণা থাকে না। তার ক্ষেত্রে এটি নাও খাটতে পারে যেহেতু তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন উজ্জ্বল।”
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সাবিকুন্নাহার লিপি ও হাসান বিপুল।]