মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ব্রিটিশ আমলে তৈরি সোনাহাট সেতুটি সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকেই কুড়িদিন উল্লিখিত সময়ে সেতুটি দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার ঘোষণা এসেছে বলে জানান কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১ হাজার ২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পর এরশাদ সরকারের আমলে রেল যোগাযোগের পরিবর্তে সেতুটিতে স্টিলের পাটাতন বিছিয়ে মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন, কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। সে মতে সেতুর মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে গেছে এবং লোহার পাতি খুলে গেছে। তবুও ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। নড়বড়ে সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থলবন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম।
যদিও ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতুটি পাশে ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। ওই সেতুটির নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও, অর্ধেক কাজই করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় আবুল হোসেন বলেন, পাথর বোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় সেতুটি কাঁপে। এছাড়া সরু সেতু দিয়ে যখন একটি ট্রাক যায় তখন পাশ দিয়ে অন্য যানবাহন যাওয়ার জায়গা থাকে না। এতে সেতুর দুই প্রান্তে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এর আগেও অনেক বার এভাবেই সংস্থার কাজ করা হয়েছিল। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ব্রিজ মেরামতের কাজ করলে পণ্য পরিবহনে কোনো সমস্যা হবে না। তবে দ্রুত কাজটি শেষ করতে পারলে ভালো।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতেই সংস্কারের জন্য ঘোষিত প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের জন্য সেতুটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেতুর সব প্লেট খুলে কাজ করতে হবে; এতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১৫-২০ দিন। সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।