ধান কাটতে নেত্রকোণার হাওরে কৃষক লীগ সভাপতি

নেত্রকোণায় হাওরে ধান কেটেছেন সমীর চন্দ; এরপর যাবেন মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিল এবং হবিগঞ্জে।

নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2023, 11:55 AM
Updated : 1 May 2023, 11:55 AM

ঢাকা থেকে নেত্রকোণায় গিয়ে দলবল নিয়ে হাওরে এক কৃষকের দুই একর জমির ধান কেটে দিয়েছেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ। ধান কাটা শেষে ঢাকায় রওনা হলেও পরে হবিগঞ্জ এবং মুন্সঅীগঞ্জ যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে তার।

সোমবার সকালে আটপাড়া উপজেলার গণেশের হাওরে সংগঠনের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে কৃষক সিদ্দিকুর রহমানের জমির ধান কেটে দেন সমীর চন্দ।

২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর সময় শ্রমিক সংকটে বোরো ধান কাটা নিয়ে যখন অনিশ্চয়তার বিয়ষটি সামনে আসে, তখন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধান কেটে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরই মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলোও ঘটা করে এভাবে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে।

সমীর চন্দ বলেন, “আজ কেবল আমি না, আমার সংগঠন সারা দেশে মোট ১৩টি স্পটে এভাবে ধান কেটে দিচ্ছে।“

নেত্রকোণায় ধান কাটার পর দিনের আর কর্মসূচি কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধান কাটা শেষে আমি ঢাকার পথে রওয়ানা হয়েছি। গাজীপুর মহানগর কৃষক লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেব বোর্ডবাজারে।”

কেবল ধান কাটার জন্যই নেত্রকোণা গেলেন?- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ। তবে কেবল আমি না। কৃষকের ধান কেটে দিতে আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সারা বাংলাদেশেই মাঠে নেমেছে। তার ধারাবাহিকতায় আজ দেশের মোট ১৩টি স্পটে কৃষক লীগ ধান কেটে দিয়েছে। তারই ধারারাহিকতায় আমি সেখানে গিয়েছি।”

আর কি কোথাও ধান কাটবেন আগামীতে?- এই প্রশ্নে কৃষক লীগ সভাপতি বলেন, “আগামীকাল মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে, পরশু দিন হবিগঞ্জে যাব।

“হাওর অঞ্চল, যেখানে আগাম বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাকা ধানের ক্ষতি করতে পারে, অথবা যেখানেই কৃষক সমস্যায় আছে, যতদিন মাঠে কৃষকের ধান থাকবে কৃষক লীগের কর্মীরাও তাদের জন্য কাজ করবে।” 

নেত্রকোণা দিয়েই শুরু করলেন?- সমীর চন্দ বলেন, “আজকে আমার পঞ্চম দিন। পরশু দিন কেটেছি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে, কাল কেটেছি ঝালকাঠিতে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে আমার কর্মসূচি চলছে।”

নেত্রকোণায় কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার আগে জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. তাহেরের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও চলে।

সেখানে আব্দুস শহীদ বলেন, বোরো মৌসুম শুরুর পর থেকেই জেলার মাঠের ধান কর্তন করে কৃষকদের পাশে রয়েছে তাদের সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ পরে সাংবাদিকদের বলেন, কোভিড মহামারী আর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এ থেকে বাংলাদেশের মানুষেরও মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতায় কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বোরোর বাম্পার ফলন করেছেন। দুর্যোগে যাতে কৃষকের কষ্টার্জিত ধান মাঠে নষ্ট না হয় সে জন্যে কৃষকের ধান কেটে গোলায় তুলে দিতে কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

মে দিবসে এই ‘ধান কাটা উৎসব’ শ্রমিকদের প্রতি উৎসর্গ করে তিনি বলেন, “যে পর্যন্ত পুরো ধান কাটা শেষ না হবে সে পর্যন্ত মাঠে থেকে কৃষকের ধান কাটবে কৃষকলীগের নেতা-কর্মীরা।”

কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি আকবর আলী চৌধুরী, কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিপ্লব, সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, অর্থ সম্পাদক নাজির মিয়া, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সহ-দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ শওকত হোসেন সানু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, আটপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রানা আঞ্জুও এ সময় বক্তব্য রাখেন।

নেত্রকোণায় এবার ১ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। হাওরের ৯৬ শতাংশ ও সমতলে ৪৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।