রাজশাহীতে ২৬ শিশু আসামিকে দুইটি করে ভালো কাজসহ ১০ শর্তে ছয় মাস মেয়াদে প্রবেশন দিয়েছে আদালত। শর্ত মেনে চললে মামলা থেকে মুক্তি মিলবে তাদের।
মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এই আদেশ দেন। আসামিদের মধ্যে ২৫ জন ছেলে ও একজন মেয়ে।
প্রবেশন ব্যবস্থায় বিচার শেষে কেউ যখন দোষী সাব্যস্ত হওয়ার উপক্রম হয় তখন বিশেষ সুযোগ দিতে পারে আদালত। এখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মেনে চলার জন্য কতকগুলো শর্ত দেওয়া হয়। আসামি শর্ত মানছেন কিনা তা দেখার জন্য বাংলাদেশে জেলায় জেলায় আছেন প্রবেশন কর্মকর্তা।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাসরিন আক্তার মিতা বলেন, ওই ২৬ শিশুর বিরুদ্ধে মাদক পরিবহন ও ধর্ষণ চেষ্টাসহ বিভিন্ন মামলা ছিলো। তাদের সবারই এটি প্রথম মামলা।
তিনি বলেন, “এই শিশুরা আর কোনো দিন এ ধরনের অপরাধে জড়াবে না শপথ পাঠ করেছে। একই সঙ্গে তাদের দুইটি করে ভালো কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
“রায় কার্যকরের এই বিষয়টি সমাজসেবা প্রবেশন অফিসারকে মনিটরিং করতে এবং প্রতি দুই মাস পর পর আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী বছরের ১৫ মে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পাবে।”
তিনি বলেন, “বিকল্প পন্থায় এই শিশুদের সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে আদালত। তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের জন্যই এমন রায় দিয়েছেন বিচারক।”
রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মতিনুর রহমান বলেন, “আদালত এটি একটি ভালো আদেশ দিয়েছেন। আদালত ওই শিশুদের অপরাধের ধরণ দেখে ভালো কাজ কী কী করবে- সেটি ঠিক করতে বলেছেন।
“এছাড়াও তাদেরকে মাদকে না জড়ানো, বাল্যবিবাহ না করা, পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, মারামারিতে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। ”
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি বিরল রায়। রাজশাহীতে প্রথম এই ধরনের রায়ের ব্যবহার হলো। আমরা এখন তাদের মনিটরিং করবো ও তাদের ভালো কাজগুলো ঠিক করে দেবো।”