সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরে অবস্থান করছেন বলে জানান শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Published : 02 Apr 2024, 04:38 PM
বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে গাজীপুর মহানগরীর জরুন এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন।
জরুন এলাকায় কেয়া গ্রুপের একাধিক কারখানার শ্রমিকেরা এই বিক্ষোভ করছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর শিল্প পুলিশের (কাশিমপুর জোন) এএসপি দীপক চন্দ্র মজুমদার।
মঙ্গলবার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধও করেন জানিয়ে তিনি বলেন, সোমবারের মত মঙ্গলবার সকালেও শ্রমিকরা কোনাবাড়ী কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। পরে ১০টায় শিল্প পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বর্তমানে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরে অবস্থান করছেন বলে জানান শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় একই কম্পাউন্ডের ভেতরে কেয়া গ্রুপের কেয়া স্পিনিং মিলস, কেয়া কটন, কেয়া ইয়ার্ন মিলস, কেয়া নিট কম্পোজিট, কেয়া ডাইং অ্যান্ড নিটিং এবং কেয়া কসমেটিকসের কারখানা আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় আট হাজার শ্রমিক কর্মরত।
কেয়া নিট কম্পোজিট কারখানার শ্রমিক মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, “ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন, ঈদের বোনাস কিচ্ছু দেয়নি। ঈদের সামনে এখন আমাদের আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কিছু করার নেই।”
তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন গত ২২ মার্চ দেয়ার কথা ছিল কিন্তু মালিকপক্ষ কথা রাখেনি। এদিকে স্টাফদের বেতন আরও বেশ কয়েক মাসের বকেয়া রেখেছে। এছাড়াও গত দুই বছরের ছুটির টাকাও পাওনা রয়েছে।
শাহানা নামে এক শ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কাজ করতে এসেছি, আন্দোলন করতে আসিনি। আমাদের পেটের ক্ষুধায় আন্দোলন করছি৷ বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও বাৎসরিক ছুটির টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
রাজিব নামে এক শ্রমিক জানান, “আন্দোলন করা হলে কেয়া স্পিনিং মিলস্, কেয়া কটন, কেয়া ইয়ার্ন মিলসের ঈদ বোনাস দিয়েছে। তবে কেয়া নিট কম্পোজিট (গার্মেন্টস) কেয়া, ডাইং এন্ড নিটিং এবং কেয়া কসমেটিকসে ঈদ বোনাস দেয়নি। এর জন্য আন্দোলন, বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। ”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্টাফ বলেন, “আমরা গত ৬ মাস যাবত বেতন পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে চলবো। বেতন চাইলেই চাকরি নাই। এজন্য আমরা আন্দোলন করতেও সাহস করি না। ”
এর আগে সোমবার ইফতারের পর কেয়া স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের সঙ্গে কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড গার্মেন্টসের শ্রমিকরা একতাবদ্ধ হয়ে কোনাবাড়ী কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন।
পরে রাত ১১টার সময় তারা রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে নেয়, কিন্তু নাইট শিফটের শ্রমিকরা মূল ফটকে অবস্থান নেয়।
শিল্প পুলিশের এএসপি দীপক চন্দ্র মজুমদার জানান, ওই কারখানা শ্রমিকরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে সোমবার থেকে আন্দোলন করছেন। মঙ্গলবারও আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তবে তারা বলছে বকেয়া পরিশোধ না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
তিনি আরও জানান, শ্রমিকদের দাবি নিয়ে কারখানার মালিকপক্ষের আলোচনা করা হচ্ছে।
শ্রমিকদের বেতন-বোনাস বকেয়া নিয়ে মালিকপক্ষের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি কারখানাগুলির কোনো কর্মকর্তা।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে একাধিকবার কারখানাগুলির মালিক আব্দুল খালিক পাঠানের মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।