মারমাদের এই উৎসব চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
Published : 14 Apr 2024, 09:48 PM
নানা আয়োজনে খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হচ্ছে মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব। নতুন বছর বরণের এই আয়োজন মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব।
রোববার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পানখাইয়া পাড়া মারমা উন্নয়ন সংসদ মাঠে শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
এরপর মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এতে মারমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সী মানুষ অংশ নেন। তবে শোভাযাত্রা রঙিন করে তোলে তরুণ-তরুণী ও শিশুরা।
শহর প্রদক্ষিণ শেষে মারমা উন্নয়ন সংসদের মাঠে এসে শোভাযাত্রা শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে উদ্বোধন করা হয় রি-আকাজা বা জলকেলি। পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে যাবে সাংগ্রাই মৈত্রীর জলে এমন বিশ্বাস থেকে পানি খেলায় মেতে উঠেন মারমারা।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, “পাহাড়ে বহু ভাষাভাষী মানুষ বসবাস করে। সংস্কৃতির মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। প্রত্যেক নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি সুরক্ষা করতে হবে।”
সাংগ্রাইয়ে অংশ নেওয়া জলিপ্রু মারমা বলেন, “আমরা সারাবছর সাংগ্রাই শোভাযাত্রার জন্য অপেক্ষা করি। এটি আমাদের প্রাণের উৎসব।”
চিংমে প্রু মারমা বলেন, “শোভাযাত্রা ও জলকেলির মাধ্যমে আমাদের আয়োজন শুরু হয়। চলবে আগামী তিন দিন। এ সময়ে আমরা উৎসব উদযাপনের ব্যস্ত সময় পার করি। অতিথি আপ্যায়ন করা হয়।”
মারমা উন্নয়ন সংসদ মাঠে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও গান পরিবেশন করে মারমা শিল্পীরা।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মারমা ভাষার কবি চিংলামং চৌধুরী বলেন, “রি-আকাজা বা জলকেলি মারমাদের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ। আমাদের বিশ্বাস পানি খেলার মাধ্যমে আমাদের পুরাতন বছরের দুঃখ, গ্লানি, ব্যর্থতা মুছে যাবে।”
প্রতি বছরই মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব দেখতে আসেন পর্যটকরাও। উৎসবের বর্ণিল আয়োজন দেখে মুগ্ধ হন তারাও।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মাহফুজা মতিন বলেন, “এমন আয়োজন আগে টেলিভিশনে দেখতাম। আজকে এসে দেখেছি। খুবই বর্ণিল আয়োজন। সুন্দর অভিজ্ঞতা।”
মারমা উন্নয়ন সংসদের সহসভাপতি ক্যাজরী মারমা বলেন, “সাংগ্রাই উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো শোভাযাত্রা করেছি। একই সঙ্গে জলকেলি উৎসব হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সংস্কৃতি ও আমাদের পরিচয় বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই।”
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
মারমাদের এই উৎসব চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।