এরই মধ্যে চারটি গাছ মরে গেছে; বাকিগুলোও মরার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Published : 06 Aug 2023, 10:33 PM
বগুড়ার আদমদীঘিতে ‘বিজয়ের নিদর্শন স্বরূপ’ লাগান বহু তালগাছের মধ্যে ৪০টি’র মাথা ছেঁটে দিল পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ।
ফলে এরই মধ্যে চারটি গাছ মরে গেছে; বাকিগুলোও মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পরপরই একদল বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার নসরতপুর রেল লাইনের পাশে শতাধিক তালগাছ রোপণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৭৫টি গাছ টিকে যায়।
গাছ লাগানোর দলে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ত ম শামছুল হক, মুনছুর রহমান, আবুল কাশেম, জাহাঙ্গীর আলম, নজরুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, সুনীল কুমার সরকারসহ অন্যরা। তাদের অনেকে আজ প্রয়াত।
জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনীল কুমার সরকার বলেন, “স্বাধীনতা ও বিজয়ের জীবন্ত স্মারক হিসেবে তালগাছগুলো রোপণ করা হয়েছিল। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত গাছগুলোর ডাল কেটে ফেলায় সেগুলো মরতে শুরু করে।”
তিনি আরও বলেন, “বিদ্যুতের পোল সরিয়ে দিয়ে তালগাছগুলো রক্ষা করা যেত; কেন করেনি তা বোধগম্য নয়। একেবারে মাথা ছেঁটে দেওয়ায় গাছগুলো মরে যাচ্ছে। ঘটনাটি সবাইকে ব্যথিত করেছে।”
যেভাবেই হোক তালগাছগুলো রক্ষার দাবি জানান সুনীল কুমার সরকার।
আরেক বীর মুক্তিযুদ্ধো আব্দুল হামিদ বলেন, “অনেক দিন বাঁচার চিন্তা থেকেই তালগাছ লাগান হয়। বিজয়ের নিদর্শন স্বরূপ শতাধিক তালগাছ রোপণ করলে শেষ পর্যন্ত ৭৫টি টিকে যায়।
“সেই গাছগুলো ৫২ বছর পরও বিজয়ের চিহ্ন হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। সারিবদ্ধ তালগাছগুলোর দিকে তাকালে যেকারও চোখ জুড়িয়ে যেত।”
এ বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, “শামছুল হকসহ অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলেও তাদের লাগান গাছগুলো স্মৃতি বহন করছিল।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে আদমদীঘি উপজেলার মুরইল বাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের একটি সাব স্টেশন নির্মাণ করা হয়। এখান থেকে নসরতপুর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন টানানোর সময় গত এপ্রিলে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ পর্যায়ক্রমে ওই তালগাছগুলোর মাথা ছাঁটতে শুরু করে।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মনোয়ারুল ইসলাম ফিরোজীর দাবি, বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের আইন অনুযায়ীই এটি করা হয়েছে। তবে এর পর থেকে অন্য তালগাছ রক্ষা করার চেষ্টা করা হবে।