টেকনাফে ধরা পড়ল ২০০ মণ উলুয়া মাছ, বিক্রি ২৪ লাখ টাকায়

মাছ ধরা ট্রলারগুলো ঘাটে পৌঁছালে মাছগুলো একনজর দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায়।

টেকনাফ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2023, 02:04 PM
Updated : 2 Feb 2023, 02:04 PM

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলের বঙ্গোপসাগরের জেলেদের জালে প্রায় ২০২ মণ উলুয়া মাছ ধরা পড়েছে, যেগুলো বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকায়। ধরা পড়া প্রতিটি মাছের ওজন ৫ থেকে ১৩ কেজি।

বুধবার বিকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বাংলাদেশ জলসীমানার ‘মৌলভীর শীল’ এলাকায় মাছগুলো ধরা পড়েছে বলে টেকনাফ কায়ুকখালীয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান।

টেকনাফ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ট্রলারে ধরা পড়া মাছগুলো জায়ান্ট কিংফিশ বা উলুয়া মাছ বলা হয়। তবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এটি ‘নাগুমাছ’ নামে পরিচিত। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘ক্যারানেক্স আইগনোবিলিস’ এবং ইংরেজি নাম ‘জায়ান্ট ট্রিভ্যালি’।

মাছ ধরা ট্রলার ‘এমভি সালমান’ এর মাঝি আছাবুল ইসলাম ও ‘এমভি আজিজুল’ এর মাঝি নুরুল হাসান বলেন, সাগরের মৌলভীর শীল এলাকায় বুধবার সকাল ১১টার দিকে পরপর চারটি ট্রলারের জেলেরা জাল ফেলতে শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকালের দিকে সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখে জেলেরা বুঝতে পারেন, জালে বড় যেকোনো ধরনের মাছের ঝাঁক আটকা পড়েছে।

পরে আশপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলে নজরে আসে নাগুমাছের ঝাঁক। প্রতিটি মাছের ওজন ৫ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত। সেখান থেকে ট্রলার মালিকদের জানানো হয় মাছগুলো ধরা পড়ার বিষয়টি।

পরে রাত ৯টার দিকে চারটি ট্রলার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে পৌঁছালে মাছগুলো একনজর দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায়। পরে ট্রলার থেকে ঝুড়িভরতি করে মাছগুলো ফরিদ আলমের ফিশারিজ ঘাটে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

চার ট্রলারের একটির মালিক সালেহ আহমদ জানান, চার ট্রলারে প্রায় ১০০০ মাছ ধরা পড়েছে। কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে আনার পর মাছগুলো প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন।  

উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মান্য করায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে। বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর।”

মাছগুলো চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেত বলে তিনি মনে করেন।

Also Read: প্রতিবাদ জানাতে বিশ্বকাপের খেলা জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখাবে না লিল

ঢাকা-চট্টগ্রামের হাটবাজারে এই মাছগুলোর কদর রয়েছে উল্লেখ করে মাছ ব্যবসায়ী হাসান ফকির জানান, তারা কয়েকজন মিলে প্রায় ১৫০ মণ মাছ কিনেছেন। এসব মাছ ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন।

তিনি বলেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খাবারের তালিকায় এটি পছন্দের মাছ। এ মাছের বারবিকিউ পর্যটকরা পছন্দ করেন।”