“এবারে আমার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম বিষয় থাকবে কর্মসংস্থান,” বলেন তিনি।
Published : 28 Apr 2023, 11:44 PM
ভোট এলেই বিএনপির ‘ভণ্ডামি’ শুরু হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেছেন, “নির্বাচন আসলে বিএনপি যে নাটকটি করে তা দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। দীর্ঘদিন থেকে দেখছি- বিএনপি বলছে, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় অথবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে না, কোনো প্রার্থী দেবে না।’ তাদের একটাই লক্ষ্য- বর্তমান সরকারের পতন, নির্বাচন কমিশন নতুন করে পুনর্গঠন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
“বিএনপির দাবি পূরণ হয় না, এদিকে নির্বাচন হয়ে যায়। তখন তারা যেটা করেন, সেটি ন্যাক্কারজনক ভণ্ডামি। সেই ভণ্ডামিটা হলো- তারা তাদের দলেরই কোনো ব্যক্তিকে কাপ-পিরিচ, দোয়াত-কলম, ঘড়ি মার্কা ইত্যাদি দিয়ে বলে তোমরা ভোট করো।”
শুক্রবার রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ২৫ থেকে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে রুয়েটে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লিটন বলেন, “(বিএনপির) মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে ২০০৮ সালে বাঘ মার্কায় ভোট (সিটি নির্বাচন) করতে দেখেছি। এ রকম খেলা এবারও তারা খেলতে পারে বলে শুনতে পাচ্ছি। তখন তারা বলবে, দল থেকে তো আমরা মনোনয়ন দেয়নি, সে ব্যক্তি হিসেবে ভোট করছে, সেটি তার বিষয়।
“এই রকম ভণ্ড, যাদের সম্পর্কে মানুষের জানতে বাকি নাই, তারা কত নোংরা, কত নিকৃষ্ট, কত ক্ষতি করেছে বাংলাদেশের! সেই বিএনপির নেতারা প্রার্থী হয়ে রাজশাহীর উন্নয়ন দেবে- এটি ভাবার কোনো কারণ নেই।”
আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বর্তমান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে।
২০০৮ সালে ২৩ হাজারেরও বেশি ভোটে আর ২০১৮ সালে ৮৭ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র হন লিটন। তিনি এবার তৃতীয়বারের মতো মেয়র হতে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
লিটন বলেন, “২১ জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আবারও নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আরও ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা চেয়ে নিয়ে আসব। এবারে আমার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম বিষয় থাকবে কর্মসংস্থান।
“শিল্পায়নের জন্য বিসিক শিল্পনগরী-২ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে উদ্যোক্তাদের নিয়ে এনে গার্মেন্টস কারখানা করতে চাই। রাজশাহীর কল্যাণে ও উন্নয়নে আরো অনেক কাজ করতে চাই।”
উন্নয়ন কাজের কোনো শেষ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রাজশাহীতে প্রায় ২৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজশাহীর উন্নয়ন দৃশ্যমান। এতোগুলো টাকা রাজশাহীর উন্নয়নে কেউ কখনও আনতে পারেনি।”
মেয়র বলেন, “রাজশাহীতে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া খুবই যৌক্তিক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ আছে, জায়গা আছে, ভবন আছে, শিক্ষক আছে, সবই আছে।
“শুধু প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নির্দেশনা, ঘোষণা এলে এটি বাস্তবায়িত হয়ে যাবে। আশা করছি আগামী সংসদ নির্বাচন হওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।”
নিজের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরতে গিয়ে লিটন বলেন, “রাজশাহী থেকে কলকাতা সরাসরি ট্রেন ও বাস যোগাযোগ চালুর ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি, ডিও লেটার দিয়েছি, সবক্ষেত্র প্রস্তুত। রাজশাহী থেকে কলকাতা ট্রেন ও বাস যাত্রা চালু হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
“আর ভারতের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে রাজশাহী হয়ে আরিচা পর্যন্ত নৌরুট চালুর কাজেও অগ্রগতি হয়েছে। এই নৌরুট চালু হলে রাজশাহীর ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধি পাবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।”
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বেগম আখতার জাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহাদত হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন।