গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রেল মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শাহ্ ইমাম আলী রেজার নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকা পরিদর্শন করেন।

গাজীপুরের ভাওয়াল ও রাজেন্দ্রপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে ফেলায় বুধবার ভোর ৪টার দিকে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এতে ট্রেনযাত্রী আসলাম মিয়া নিহত ও লোকো মাস্টারসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।

এই ঘটনা তদন্তে রেলওয়ে, গাজীপুর জেলা প্রশাসন এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলাদা তিনটি কমিটি করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো দেখবো এবং সংশ্লিষ্টদের কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন সাবমিট করবো। ইতোমধ্যে ট্রেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।”

তদন্ত প্রতিবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে দুর্ঘটনার একদিন পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেললাইন পুরোপুরি মেরামত হওয়ায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

এর আগে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে রেললাইনে নতুন পাত বসানো শেষে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলপথ ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী করা হয়।

দুর্ঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ পথ বন্ধ থাকায় ময়মনসিংহগামী ট্রেনগুলো ভৈরব-কিশোরগঞ্জ হয়ে চলেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা তিনটি ট্রেনের নির্ধারিত সূচি বাতিল করা হয় দুর্ঘটনার পর।

দুর্ঘটনায় শুধু রেল লাইনের বগি ও ইঞ্জিনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি; পাশাপাশি ৬০০ ফুট রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত এবং এর মধ্যে একশ স্লিপার ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে তখন ঢাকা রেল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছিলেন।

রাতেই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, অক্সি-অ্যাসিটিলিন গ্যাস ব্যবহার করে রেললাইন কেটে ফেলা হয়েছে।

রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় আহতদের মধ্যে তিনজনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর বলে রাতে খবর আসে।

তাদের মধ্যে ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার) এমদাদুল হক, তার সহকারী চালক সবুজ ও নারী যাত্রী রূপালী সাহা রয়েছেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

রেলে নাশকতা: ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হল একদিন পর