উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টরপ্রতি ১ হাজার ৩৬০ কেজি বা ১.৩৬ মেট্রিকটন।
Published : 16 Jan 2024, 07:53 PM
গত বছরের তুলনায় কয়েক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন ফরিদপুরের কৃষকেরা। তারা বলছেন, বর্তমানে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়েছে। অনেকে একে ভোজ্য তেল সয়াবিনের বিকল্প হিসাবেও ব্যবহার করছেন। আর এই ফসল স্বল্প খরচ ও সময়ে পাওয়া যায়।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশীয় বাজারের ভোজ্য তেলের দর বৃদ্ধিতে এবার ফরিদপুরে বেড়েছে সরিষার চাষ। রবি মৌসুমের ফসল হিসাবে কৃষকের এতে আগ্রহ বেড়েছে। জেলার নয়টি উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠেই এবার আবাদ বেড়েছে সরিষার।
সার, ওষুধ, পানি ও অল্প পরিচর্যায় এবং সরকারি প্রণোদনা পাওয়ায় দিন দিন সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। জেলার নর্থচ্যানেল, ডিক্রিরচর, গোলডাঙ্গীচরসহ বিভিন্ন মাঠে অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে সরিষা ফুল।
সরজমিনে সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ও চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গাছ দুই থেকে চার ফুট পর্যন্ত বড় হয়ে উঠেছে। হলুদ ফুলে ফুলে ভরে গেছে মাঠ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ফুলে ভরা সরিষার গাছ।
চাষিরা জানালেন, বারি-১৪, ১৫, ১৬, ১৭, বিনা-৪, ৮, ৯, টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেছেন বেশিরভাগ। উচ্চ ফলনশীল জাত হওয়ায় ভাল ফলনের আশা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ মৌসুমে জেলায় ১৪ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টরপ্রতি ১ হাজার ৩৬০ কেজি বা ১.৩৬ মেট্রিকটন।
সরিষার গড় বাজার মূল্য মণপ্রতি ৩ হাজার টাকার বেশি। সেই হিসাবে এই মৌসুমেই ১৫১ কোটি ৩৮ লক্ষাধিক টাকার সরিষা উৎপাদন করবেন জেলার চাষিরা।
অম্বিকাপুরের চাষি ইব্রাহিম মোল্লা, রহিম মাতব্বরসহ কয়েকজন জানালেন, বোরো ধান রোপণের আগেই কম সময়ে একটি বাড়তি ফসল আবাদ করতে কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে বীজ রোপণের মাত্র ৮০-৯০ দিনের মধ্যেই ফসল তোলা যায়।
বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। বৈরী আবহাওয়া না হলে বিঘাপ্রতি ৫-৬ মণ সরিষা বীজ পাওয়া যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় ফরিদপুরে এ বছর ২ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। চাষিরা আগে যেখানে দুই ফসল ফলাত এখন সেখানে তিন ফসল চাষাবাদ করছেন। এতে তারা বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন।