ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারে বৃষ্টি

দুপুরে কক্সবাজারে আধাঘণ্টা মাঝারি বৃষ্টিপাতের পর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2023, 11:00 AM
Updated : 12 May 2023, 11:00 AM

গভীর সাগর থেকে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব এখন কক্সবাজারে দৃশ্যমান।

শুক্রবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিট থেকে সেখানে আধাঘণ্টা মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে, এখন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

কক্সবাজারে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা, থেমে থেমে এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান।

দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে এখন ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

মোখার কারণে সাগর স্বাভাবিক পরিস্থিতির চেয়ে উত্তাল রয়েছে জানিয়ে সৈকতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, পর্যটকদের সর্তক করতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।

“আর পর্যটকদের হাঁটু পানির নিচে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের নির্দেশনা মতে ৪ নম্বর সংকেত হলে সৈকতের পানিতে নামা বন্ধ করা হবে।”

স্থানীয় প্রশাসন মানুষজনের নিরাপত্তায় সর্ব্বোচ্চ সজাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

“দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ২৫ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে। যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ৫ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন চাল,  ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন শুকনো কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে।

“প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র, ১০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। অবস্থা বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। সেন্টমার্টিনের বাসিন্দার আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।“

ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় উদ্বেগের মধ্যে দেশের সর্বদক্ষিণের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ছেড়ে মূল ভূখণ্ডে আসতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা বলছেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার মিলিয়ে দুই শতাধিক পরিবার সেন্টমার্টিন ছেড়ে টেকনাফে এসেছেন। তাদের একটি বড় অংশ দ্বীপের কোনারপাড়া, গলাচিপা, ডেইলপাড়া ও উত্তর পাড়ার বাসিন্দা। শুক্রবার দুপুরেও অনেককে পরিবার পরিজন আর ব্যাগ-বোচকা নিয়ে ট্রলারে করে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে পৌঁছাতে দেখা যায়।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা শুক্রবার সকালে আরও শক্তিশালী হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। বর্তমান গতিপথ ঠিক থাকলে এ ঝড় রোববার দুপুর নাগাদ কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসার সময় প্রচুর বৃষ্টি ঝরাবে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় নিচু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পরে।

কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের সময় কক্সবাজার উপকূলজুড়ে সাধারণত ৪ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়ে থাকে। আমরা এবারও তেমনটাই আশঙ্কা করছি।”

আরও পড়ুন-

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ