ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় দেড় মাস স্থায়ী এই বাজারে বেচা-কেনা হয় ৫০ কোটি টাকার বেশি টমেটো।
Published : 11 May 2023, 04:20 PM
কৃষি প্রযুক্তির উন্নয়নে এক সময়ের শীতকালীন সবজি টমেটো এখন পাওয়া যায় প্রায় সারাবছরই। আর গ্রীষ্মকালে পাওয়া এই টমোটোর বেচা-কেনায় জমে উঠেছে দিনাজপুরের গাবুড়া বাজার।
দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের গাবুড়াহাটের এ বাজারটি উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গ্রীষ্মকালীন টমেটোর বাজার বলে দাবি স্থানীয়দের।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় দেড় মাস স্থায়ী এই বাজারে বেচা-কেনা হয় ৫০ কোটি টাকার বেশি টমেটো। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে টমেটোর বেচা-কেনা। এরপর সারা দিন চলে ট্রাকে-ট্রাকে টমেটো লোড।
এই হাটের ইজারাদার ও শেখপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম জানান- ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট ও শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এই বাজার থেকে টমেটো কিনে নিয়ে যায়।
“এবারও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা টমেটো কিনছেন। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক টমেটো লোড হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যায়।”
মূলত জেলার সদর, বিরল, বোচাগঞ্জ এবং চিরিরবন্দর উপজেলায় ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয় গ্রীষ্মকালীন (নাবিজাত) টমেটো। এবার এক হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে এই টমেটোর আবাদ হয়েছে।
বাজারে আসা টমেটো বিক্রেতা কৃষক ইউসুফ আলী ও মহিদুল ইসলাম জানান- এবার এলাকায় টমেটোর আবাদ বেশি, ফলনও ভালো হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রথম থেকেই ভালো দামও পাচ্ছেন তারা।
কৃষক মহিদুল জানান- ভালো মানের টমেটো প্রতি মণ বিক্রি করেছেন ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। তিনি তার এক বিঘা জমিতে টমেটো বিক্রি করে পেয়েছেন এক লাখ টাকা।
ভালো দামে টমেটো বিক্রি করতে পেরে তারা খুশি। তবে দ্রুত পঁচনশীল এই সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মাঝে মধ্যে লোকসানও গুণতে হয় চাষিদের।
একইভাবে টমেটোর আমদানি ভালো থাকায় খুশি গাবুড়া বাজারে ব্যবসায়ীরাও।
ঢাকার পাইকার মোবারক আলী জানান, কয়েক বছর পর এবার টমেটোর আমদানি ভালো এবং তাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে তারা টমেটো কিনছেন। তবে দাম প্রতি মণে দুই-একশ টাকার মধ্যে উঠানামা করায় তাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে এবং কৃষকও লাভবান হচ্ছে।
ইজারাদার মোমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার টমেটো বেচা-কেনায় কৃষক এবং বেপারি উভয়ে লাভবান। এখন বাজারে দৈনিক গড়ে এক কোটি টাকার টমেটো বেচা-কেনা হচ্ছে। এই বাজার আর ১০/১২ দিন পর্যন্ত চলবে।”
টমেটো চাষিদের জন্য এখানে একটি হিমাগার স্থাপনের দাবি জানিয়ে মোমিনুল বলেন, “সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত পচনশীল এই টমেটোর আমদানি বেশি হলে কৃষককে বাধ্য হয়ে লোকসান টমেটো বিক্রি করতে হয়। অথচ এই হাট থেকে সরকার ইজারা বাবদ প্রতি বছর ৮-৯ লাখ টাকা রাজস্ব পায়।”