বরিশালে দাফনের ২২ দিন পর কবর থেকে তোলে এক সাংবাদিক পুত্রের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
বুধবার বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্থান থেকে তোলে লাশের ময়নাতদন্ত করে ফের দাফন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও আরটিভির জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী খান জসিম।
তিনি জানান, গত ২৬ জানুয়ারি ছেলের বন্ধুরা তার একমাত্র ছেলে মো. মুসাব্বির খান জারিফকে মাদারীপুর নিয়ে যায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেরার কথা থাকলেও জারিফ ফেরেনি। এর পরদিন (২৯ জানুয়ারি) জারিফের বন্ধুরা তাকে অসুস্থ অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক আমানুল্লাহ কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সন্তান হত্যার অভিযোগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলী খান বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও হত্যায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।
পরিদর্শক আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করা হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালত কবর থেকে লাশ তোলার নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আবু আব্দুল্লাহ খানের উপস্থিতিতে বুধবার লাশ তোলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বলে পরিদর্শক জানান।
সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী খান জসিম জানান, ২৮ জানুয়ারি না ফেরায় জারিফের মোবাইল ফোনে কল করলেও সে রিসিভ করেনি। তার এক বন্ধুর নম্বরে কল করলে সে জানায়, জারিফ লেকে গোসল করতে গেছে। জারিফের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ছেলেটি কল কেটে দেয়।
এর একদিন পর (২৯ জানুয়ারি) জারিফের তিন বন্ধু এসে একটি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে কল করতে বলে।
জসিম বলেন, “সেই নম্বরে কল করে জানতে পারি, জারিফ অসুস্থ হয়ে মাদারীপুর হাসপাতালে আছে। সেখান থেকে বন্ধুরা তাকে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এরপর ওই নম্বরে কল করা হলেও কেউ রিসিভ করেনি।
“সন্ধ্যা ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জারিফকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্বাভাবিকভাবেই জারিফের দাফন সম্পন্ন করা হয়।”
জসিম আরও জানান, কিন্তু বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া জারিফের মোবাইল ফোন খতিয়ে ও স্থানীয়দের দেওয়া বিভিন্ন তথ্যে জারিফের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে নিশ্চিত হয়ে তিনি আইনের শরণাপন্ন হয়েছেন।