জেলা বিএনপি জানিয়েছে, কামরুল হাসান সিদ্দিকী এবং সরকার বাদল দুজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
Published : 05 Jan 2023, 10:58 PM
বিএনপির সংসদ সদস্যদের ছেড়ে দেওয়া বগুড়ার দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন দলটির সাবেক দুই নেতা; যারা আগে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর মধ্যে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন নন্দীগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী।
আর বগুড়া-৪ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল। একই দিন তিনিও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে কামরুল হাসান সিদ্দিকী নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি এবং বিএনপির সমর্থনে দুইবারের নির্বাচিত মেয়র। তবে এখন তিনি দলের কোনো পদে নেই।
অপরদিকে সরকার বাদল অবিভক্ত সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। পরে সদর উপজেলা ভেঙে শাহজাহানপুর উপজেলাকে আলাদা করা হয়। তখন তিনি বিএনপির সমর্থনে সেখান থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনিও এখন আর বিএনপির কোনো পদে নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কামরুল হাসান সিদ্দিকী এবং সরকার বাদল দুজনের কেউ আর বিএনপিতে নেই। তাদের দুজনকে অনেক আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।”
কামরুল হাসান সিদ্দিকী ও সরকার বাদলের মনোয়নপত্র জমার বিষয়টি জানিয়েছেন বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান। তিনি বলেন, দুজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
এ সময় তিনি আরও জানান, বগুড়ার দুই আসনের উপনির্বাচনে মোট ২২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসনে ১৩ জন এবং বগুড়া-৪ আসনে নয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সম্প্রতি বিএনপির সংসদ সদস্য পদত্যাগের পর নতুন করে বগুড়ার দুটি আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর কামরুল হাসান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আর এখন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় নন। ব্যক্তিগত ইমেজ আর এলাকার মানুষের দাবির মুখে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।
অপরদিকে সরকার বাদল বলেন, “দলের বাইরে থেকে নির্বাচন করছি কিন্তু মানুষ তো জানে আমি কার লোক।“
দলে আছেন কি-না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দলে আছি কি নেই তা দল নির্ধারণ করবে। তবে, বিএনপির আদর্শ আমি লালন করি। আমি বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন নই। কিন্তু এখন আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী। দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।”
এদিকে বগুড়া-৪ আসন থেকে ১৪ দলীয় মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি সাবেক সাংসদ এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তানসেন বলেন, “বিগত সময়ে বগুড়া-৪ আসনের এমপি হিসেবে এলাকার বিদ্যুতায়ন, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ করেছি। এবারও আমাকে ১৪ দল থেকে মনোনীত করা হয়েছে। আগামীতেও আমি সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো।”
বগুড়া-৬ আসনের নৌকার মনোনীত প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু মনোনয়ন জমা দিয়ে বলেন, “এই সংসদীয় আসনের মেয়াদ এক বছর। কিন্তু যে কাজগুলো বাকি আছে সেগুলো সম্পন্ন করার জন্য এই একটি বছরই যথেষ্ট।”
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম, জাসদের ইমদাদুল হক, গণ ফ্রন্টের আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফতে আন্দোলনের মো. নজরুল ইসলাম, জাকের পার্টির প্রার্থী মো. ফয়সাল বিন শফিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল, আবদুল মান্নান আকন্দ, সৈয়দ কবির আহম্মেদ, আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম, রাকিব হাসান ও সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা কমিটির সভাপতি মাছুদার রহমান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন, জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল, জাকের পার্টির আবদুর রশিদ সরদার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের তাজ উদ্দীন মণ্ডল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম), গোলাম মোস্তফা, ইলিয়াস আলী, কামরুল হাসান সিদ্দিকী ও আবদুর রশিদ।
আরও পড়ুন: