বরিশালে ‘প্রেমিকাকে’ ভিডিও কলে রেখে ফুটবলারের আত্মহত্যা

বিয়ের পর পুরানো প্রেমিকার সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। এ নিয়ে তার পরিবারে অশান্তি চলছিল বলে জানান স্বজনরা।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 06:24 AM
Updated : 7 May 2023, 06:24 AM

বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের নির্মাণাধীন ড্রেসিং রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ফুটবলার। 

শনিবার গভীর রাতে ‘প্রেমিকাকে’ প্রথমে আত্মহত্যার সরঞ্জামের ছবি পাঠিয়ে এবং পরে ভিডিও কলে রেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম। 

ফুটবলার মো. সোহেল জমাদ্দার (২৩) ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার রায়াপুর বটতলা এলাকার হাফিজ জমাদ্দারের ছেলে।  বিবাহিত হলেও আরেক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার।

সোহেলের সহ-খেলোয়াড় মো. রায়হান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকার সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব-১৭ দলে গোলরক্ষক হিসেবে দুই বছর খেলেছেন সোহেল। সর্বশেষ বরিশালের বিভিন্ন দলের হয়ে খেলছিলেন।

বোন শান্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিয়ের আগে বরিশাল নগরীর বেসরকারি নার্সিং কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে সোহেলের প্রেম ছিল। কিন্তু তাদের সেই সম্পর্ক টেকেনি। পরে তার ভাইকে অন্যত্র বিয়ে করানো হয়। আট মাস বয়সী একটি ছেলে আছে তার।

শান্তা জানান, বিয়ের পর সবার অজান্তে সেই মেয়ের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। কোনোভাবেই দুই জনকে ফেরানো যায়নি। এ নিয়ে সোহেলের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এর জেরে শনিবারও ঝগড়া হলে ভাইয়ের স্ত্রী তাদের সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। 

রোববার খেলা থাকায় সোহেল শনিবার স্টেডিয়ামে যান। কিন্তু সন্ধ্যার পর তার সহখেলোয়াড়রা সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। শান্তাও যোগাযোগের চেষ্টা করে ভাইকে পাননি বলে জানান।

তিনি বলেন, “রাতে সোহেলের প্রেমিকা জানায়, ইমোতে যোগাযোগ করে সোহেল বলেছে, গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করবে। রশি আর মইয়ের ছবিও পাঠিয়েছে। পরে গভীর রাতে তাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সোহেল।” 

শান্তা জানান, বিষয়টি জানার পর রাতে তারা সোহেলের সাথে ইমোতেও যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে সকালে স্টেডিয়ামে গিয়ে ভাইয়ের লাশ পান। 

এসআই মো. শহীদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের জন্য নির্মাণাধীন ড্রেসিং রুমে ফ্যানের আংটার সাথে গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ ঝুলছিল। সোহেল আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা। 

“কিন্তু রশিতে ঝোলার পর রশি ছিড়ে নিচে পড়ে গিয়েছেন। এতে তার মাথা ফেটে গেছে।”

এসআই শহীদুল বলেন, “সোহেলের মোবাইল আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার পূর্বে পাঠানো ছবিও পাওয়া গেছে।” 

তবে ভিডিও কলের অপর প্রান্তের নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি বলে জানান এই পুলিশ সদস্য।  

সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সোহেলের লাশ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা হবে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এসআই শহীদুল।