এ ঘটনায় রাতে দেবিদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এমএ কাইয়ুম ভূঁঞা।
Published : 13 Jul 2023, 12:08 AM
কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার চালানোর সময় এক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এমএ কাইয়ুম ভূঁঞা এ অভিযোগ করেছেন।
বুধবার বিকেলে পৌরসভার বারেরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তার দাবি, আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চালানো হামলায় তার পাঁচ সমর্থক আহত হয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম।
এ ঘটনায় রাতে দেবিদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন এমএ কাইয়ুম ভূঁঞা।
তিনি জানান, তার সমর্থক জয়নাল আবেদীন, আবুল বাশার, সুমন ভূঁঞাসহ আহত পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ক্যারম বোর্ড প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই মেয়র প্রার্থী জানান, বিকালে পৌরসভার বারেরা এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। বারেরা এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে বাস স্টেশনের দিকে যাবার পথে তাদের ওপর হামলা চালায় নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এ সময় তার ভাতিজা সুমনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়।
তবে কর্মীরা তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ায় তিনি আহত হননি বলে জানান এমএ কাইয়ুম ভূঁঞা।
তিনি বলেন, “পুলিশকে অনেকবার টেলিফোন করার পর ঘটনার দুই ঘণ্টা পর তারা আসে। তবে হামলাকারীদের কাউকে আটক করেনি। উল্টো আমাদেরকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাপ দেয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতেও আমার দুই কর্মীকে মারধর করেছে নৌকার প্রার্থীর বহিরাগত লোকজন।
“প্রতিদিনই আমাদের নির্বাচনি প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আমি শঙ্কিত।”
সকালেও পৌরসভার ভিংলাবাড়িতে নিজের নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কাইয়ুম ভূঁঞা অভিযোগ করে বলেছেন, “নৌকার কর্মী-সমর্থকরা আমার প্রচারে পদে পদে বাধা দিচ্ছেন। ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমার দুই কর্মী পোস্টার লাগাতে গেলে তাদের মারধর করা হয়। আমাকে বিভিন্ন মহল থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।”
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি উঠান বৈঠকে ছিলাম। কারা কখন হামলা করেছে আমার জানা নেই। আমার কোন কর্মী সমর্থক হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। আমার জনপ্রিয়তা দেখে এখন এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। চারদিকে এখন নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।”
দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বলেন, “নির্বাচনী প্রচারে বাধা বা হামলা সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ থানায় দিয়েছেন এক প্রার্থী। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
মো. আবদুল কাইয়ূম ভূঁঞা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় গত ৬ জুলাই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
২০০২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু সীমানা নিয়ে আইনি জটিলতা থাকায় গত প্রায় ২১ বছরেও নির্বাচন হয়নি। এবারই প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
গত ৩১ মে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এতে মেয়র পদে ৮, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৯ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। এখানে ভোটার রয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার।
আরো পড়ুন:
দেবিদ্বারের বিদ্রোহী দুই প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার