“এবার আরও একটু ভালো এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় ঈদযাত্রা জনগণকে উপহার দিতে সক্ষম হব।”
Published : 04 Apr 2024, 07:08 PM
ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ ঈদযাত্রায় শামিল না হওয়ার অনুরোধ করেছেন হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজি শাহাবুদ্দিন খান।
তিনি বলেন, “শিল্প-কারখানা অধ্যুষিত অঞ্চলের শ্রমিক ভাইয়েরা কিন্তু অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় শামিল হন। খোলা ট্রাক, পিকআপ ও বাসের ছাদে উঠাসহ নানানভাবে নিজের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবেন না।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এ ধরনের যাত্রায় অনেকবার দেখেছি দুর্ঘটনা ঘটে বহু জীবন ঝরে পড়েছে। আমরা বলব, আপনারা সচেতনভাবে নিজের জীবনকে ভালোবেসে অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় শামিল হবেন না।”
এ সময় চালক, মালিক ও শ্রমিকদের উদ্দেশে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান বলেন, “আপনারা কোনোভাবেই বাসের ছাদ, পিকআপ ও পণ্যবাহী যানে যাত্রী তুলবেন না। এটা বেআইনি এবং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
“আমরা বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ ও মহানগর পুলিশ রাস্তায় তৎপর আছি। কোনোভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ অনিরাপদ যাত্রা করতে দেওয়া হবে না। কেউ করলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”
তিনি বলেন, “ঈদ উপলক্ষে যে নিরাপত্তা সেবা আমরা দিচ্ছি, সেখানে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকে। আমাদের মোবাইল টহল টিম, সাদা পোশাকে ডিউটি, রেকার ব্যবস্থাপনা এবং অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাপনা থাকে।
“অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। তার জন্য মহাসড়কের সব জায়গায় মেকানিক রয়েছে। তাদের একটি তালিকা তৈরি করে প্রস্তুত রেখেছি। আমাদের কন্ট্রোল রুমেও তার তালিকা রাখা আছে। যাতে কোনো গাড়ি বিকল হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করে যানজটমুক্ত করতে পারি।”
ঈদযাত্রায় প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে শাহাবুদ্দিন খান বলেন, “আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। যে কোনো প্রযুক্তি আমাদের সেবার মান এবং দক্ষতাকে বৃদ্ধি করে। এবারে আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং চন্দ্রাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। এটি দিয়ে আমরা রাস্তা, যানজট ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
“এর সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের সব সদস্যদের যেখানে যে ডিউটি করছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে বডিওন ক্যামেরা থাকবে। আমরা একটি অনলাইন নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কাজ করছি। আমরা রিয়েল টাইম কন্ট্রোলে কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, আমরা সেখানে কমান্ড দিতে পারছি, ট্রাফিক নিদের্শনা দিতে পারছি।”
হাইওয়ে পুলিশের প্রধান বলেন, “এ ছাড়া এর সঙ্গে কিন্তু আমরা যুক্ত করেছি ড্রোন। গতবারও আমরা ড্রোন ব্যবহার করেছিলাম। যেখানে যানজটের সম্ভাবনা থাকে সেই সব জায়গাগুলোতে। এবার আমরা ড্রোনের সংখ্যা বাড়ানো এবং কোয়ালিটি বৃদ্ধি করেছি। এবারে ড্রোন দিয়ে পিএম সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা কথা বলে ট্রাফিক নির্দেশনা, ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা, জনসাধারণ এবং গাড়ির চালকদের নির্দেশনা দিতে পারব।”
পুলিশের পক্ষ থেকে মহাসড়কের কোথায় কোথায় চ্যালেঞ্জ; যানজট হতে পারে সেইগুলোকে চিহ্নিত এবং সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “এক দেড় মাস আগে থেকেই ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে যত ধরনের প্রতিবন্ধকতা, মেরামত, অস্থায়ী হাট-বাজার এবং হকার এগুলো আমরা অপসারণের কাজ করে চলেছি। মেরামতের কাজও হয়েছে।
“কোথাও নতুন রাস্তা, মহাসড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। সেই সব জায়গায় সড়ক ও জনপথ তার কাজের পর্যায়টা এমনভাবে ঈদ উপলক্ষে রেখেছে যাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়।”
হাইওয়ে পুলিশের প্রধান বলেন, “এভাবে সম্পূর্ণভাবে ঈদযাত্রার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। নিরাপত্তা দিক থেকে সার্বিক প্রস্তুতিও পুলিশ নিয়েছে। গত কয়েক বছরের ঈদযাত্রা যেমন সুন্দর, নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও যানজট মুক্ত হয়েছে; এবারে আরও একটু ভালো এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় ঈদযাত্রা জনগণকে উপহার দিতে সক্ষম হব।”
এ সময় হাইওয়ে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মো. মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি শ্যামল কুমার মুখার্জী, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানি সরকার উপস্থিত ছিলেন