বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, “অপরাধীদের পরিবর্তে নিরপরাধীদের গ্রেপ্তার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।”
Published : 01 May 2024, 11:14 PM
বান্দরবানের বম জনগোষ্ঠীর ওপর ‘নিপীড়ন ও হয়রানি’র অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে ঢাকার শাহবাগে।
বুধবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আদিবাসী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলোর ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারাও সংহতি জানিয়ে সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে বলা হয়, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের দুই উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার জের ধরে ৭ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত যৌথ বাহিনী বান্দরবানের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িতে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ সদস্যদের ধরতে গিয়ে বম জনগৌষ্ঠীর নারী, শিশু, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে ‘গ্রেপ্তার, তল্লাশি, মামলা, হয়রানি’ করা হয়।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, “শুধু বম নয়, সাথে ত্রিপুরা এবং মারমা জনগোষ্ঠীসহ অপরাপর জাতগোষ্ঠীগুলোকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে শাসকগোষ্ঠী। অপরাধীদের পরিবর্তে নিরপরাধীদের গ্রেপ্তার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।
“আদিবাসীদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পাহাড় থেকে সেনাশাসন বন্ধ করতে হবে। অভিলম্বে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। “
সমাবেশে বম জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী মিআ বম বলেন, “ওই এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযানের নামে সাধারণ মানুষের ওপর চরম নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার, বন্দি, উচ্ছেদ করার হুমকি দিচ্ছে।”
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দীপক শীল বলেন, “ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা সত্য। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় যারা জড়িত, তাদেরকে প্রশাসন বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে। কিন্তু এই ব্যাংক ডাকাতিকে কেন্দ্র করে যদি বম জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করা হয়, তা মেনে নেওয়া যায় না।
“আমরা বিশ্বাস করি, বম জনগোষ্ঠীর সাধারণ মানুষ ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত হতে পারে না। শিশু, গর্ভবতী মাকে নির্যাতন করা হয়েছে, তারা তো ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত না।”
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, “শাসকগোষ্ঠীর সৃষ্টি করা সস্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ এর ভুলের কারণে পুরো বম জনগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসীর খেতাব দেওয়া হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি উচ্ছেদের একটি ষড়যন্ত্র মাত্র।”
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি এন্টনি রেমা বলেন, “কেএনএফ সৃষ্টির কারণ মূলত পার্বত্য চুক্তির অবাস্তবায়ন। চুক্তি বাস্তবায়ন হলে এমন হত না।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে বাংলাদেশ হিল উইমেনস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা, ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পায়া ম্রো বক্তব্য দেন।