১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে বরগুনা প্রেসক্লাব।
Published : 28 Mar 2024, 11:40 PM
বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টা ও হামলার মামলায় সাত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলার আসামিরা বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হারুন অর রশিদ তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী এ কে এম শফিকুল ইসলাম নেছার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আসামিরা হলেন- জেলা শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কের বাসিন্দা মুশফিকুল ইসলাম (মুশফিক আরিফ), বরগুনা পৌরসভার আব্দুল কাদের সড়কের আল আমিন, থানা পাড়ার রাকিবুল হাসান রাজন খান, সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামের সগীর হোসেন, পাজরাভাঙ্গা গ্রামের শাজনুস শরীফ, পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ রূপদোনের গ্রামের জাফরুল হাসান রুহান (রুদ্র রুহান) এবং বাঁশতলা নাসনা পাড়া গ্রামের এম হারুন অর রশিদ রিংকু।
মামলার বরাতে আইনজীবীরা বলেন, বরগুনা প্রেসক্লাবের অধিকাংশ সদস্য বার্ষিক শিক্ষা সফরে ভারতে থাকা অবস্থায় ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ তালুকদার ও মুশফিক আরিফের নেতৃত্বে বরগুনা প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে দখলের চেষ্টা চালানো হয়।
এ সময় হামলায় বরগুনা প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও এনটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল হাফিজ, যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক ফেরদৌস খান ইমন, সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক সাইফুল ইসলাম মিরাজসহ সাত সংবাদকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় ২২ মার্চ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে বরগুনা প্রেসক্লাব।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাফর হোসেন হাওলাদার বলেন, “বরগুনা প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনার ১৩ দিন পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মামলার ১ নম্বর আসামি কথিত সাংবাদিক মাসুদ তালুকদার। এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হত্যা মামলা দায়ের করে স্বার্থন্বেষী ওই মহলটি।
“এ ছাড়া বরগুনা প্রেসক্লাবের প্যাড ও লোগো ব্যবহার করে আসামিরাসহ বাইরের কিছু তথাকথিত সাংবাদিকদের নিয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে একটি ভুয়া কমিটির ঘোষণা করে।”
১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে কয়েকজন বেধড়ক মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ২ মার্চ তিনি মারা যান।
ঘটনার দুই দিন পর ৪ মার্চ তালুকদার মাসউদের স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
তালুকদার মাসউদ ‘ভোরের ডাক’ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি ও সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ছিলেন।
হত্যা মামলার আট আসামি কারাগারে রয়েছেন। ২০ মার্চ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় বরগুনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হারুন অর রশীদ।
সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হেলাল উদ্দিন জানিয়েছিলেন, শুনানি শেষে মামলার ৩ নম্বর আসামি ‘সংবাদ প্রকাশ’ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি কাসেম হাওলাদার এবং সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি ৫ নম্বর আসামি সাইফুল ইসলাম মিরাজকে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
মামলার বাকি পাঁচ আসামি এনটিভির বরগুনা জেলা প্রতিবেদক সোহেল হাফিজ ও তার ক্যামেরা পারসন আরিফলু ইসলাম মুরাদ, বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম মেহেদি, ‘আজকের দর্পন’ পত্রিকার ওলি উল্লাহ ইমরান ও তাদের সহযোগী সোহাগ হাওলাদারকে পাঁচ দিন জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন:
সাংবাদিক হত্যা মামলা: দুজন রিমান্ডে, পাঁচজনকে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদ