সিলেটের জন্য ঐতিহাসিক দিন: উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন
Published : 28 Apr 2025, 12:29 AM
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু হয়েছে।
রোববার রাত ৮টা ৫ মিনিটে ৬০ টন পণ্য নিয়ে স্পেনের উদ্দেশে উড়াল দেয় এয়ারবাসের একটি ফ্লাইট। এটির ব্যবস্থাপনায় ছিল গ্যালিস্টার ইনফিনিট অ্যাভিয়েশন।
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ওসমানী বিমানবন্দরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কার্গো ফ্লাইট শুরু হওয়ায় ব্যবসায় নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে বলে মনে করছেন এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের অতিথিরা।
সিলেটে থেকে এমন ফ্লাইট শুরু করায় খুশি রপ্তানিকারকসহ সিলেটের ব্যবসায়ীরা। প্রথম ফ্লাইটে রপ্তানি হওয়া ৬০ টন পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি পোশাক সামগ্রী।
সিলেটের আমদানি ও রপ্তানিকারক মো. আবুল কালাম কার্গো ফ্লাইট চালু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ব্যবসায়ীরা কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করা ছাড়া আমদানিও করতে পারবেন। আমদানি করারও ভালো সুযোগ রয়েছে।
চালু হওয়া কার্গো ফ্লাইট যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে নজর রাখার আহ্বান জানানো হয়।
বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন বলেন, এর মাধ্যমে রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সকলে মিলে একত্রে কাজ করায় এটা সম্ভব হয়েছে।
“সিলেটের জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন। ঢাকার বাইরে সিলেট থেকে স্বাধীনতার পর এটি প্রথম কার্গো ফ্লাইট। আমরা যে এত দ্রুত একটি এত বড় সমস্যা সমাধান করতে পেরেছি, এটার একমাত্র কারণ হচ্ছে আমরা সকলে মিলে একত্রে কাজ করতে পেরেছি। আমরা আমাদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়েছি। ভবিষ্যতে যাতে এ ফ্লাইট অব্যাহত থাকে সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর সর্বক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। সাফল্য কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি যাত্রা। আমরা আজকে যে সাফল্য অর্জন করলাম, এটি কোনোভাবেই গন্তব্য নয়, এটি একটি যাত্রা।
‘‘আমাদের ব্যবসায়ীরা যে খরচের জন্য অন্য দেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করতেন, এখন তার থেকে অনেক কম খরচে আমাদের দেশ থেকে কার্গো করতে পারবেন। ঢাকা থেকে ইউরোপে খরচ ১৩ শতাংশ কমেছে। আমরা সকলে মিলে একসাথে কাজ করে সমস্যার সমাধান করেছি।’’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী, বিমান ও পর্যটন সচিব নাসরীন জাহান, ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ বক্তব্য দেন।
এর আগে উপদেষ্টা বশীরউদ্দিন কার্গো কমপ্লেক্স ঘুরে দেখেন।
এর আগে এদিন বিকাল পৌনে ৫টায় ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছে কার্গো উড়োজাহাজটি। অবতরণের পর শুরু হয় পণ্য তোলার কাযর্ক্রম, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
লোড হ্যান্ডেলিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইস কর্তৃপক্ষ। প্রথম ফ্লাইটে ঢাকার এমজিএইচ গ্রুপ ও অরিজিন সলিউশন্সসহ আরেকটি কোম্পানির তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করা হয়।
এর আগে শনিবার ট্রাকযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে পণ্য পৌঁছে। সন্ধায় উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে রাত ৮টা ৫ মিনিটের সময় কার্গো উড়োজাহাজটি ওসমানী বিমানবন্দর ছাড়ে। এসময় বিভিন্ন এয়ারলইন্সের কর্মকর্তা, ঢাকার রপ্তানীকারকসহ সিলেটের সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আগে সিলেট থেকে যাত্রীবাহী বিমানে কিছু পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হত। পরে কার্গো ফ্লাইটের মালামাল রাখার জন্য ২০২২ সালে ১০০ টন ক্ষমতার এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। ওই বছর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করে।
এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন ও এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন মেশিন পন করা হয়।