শনিবার সকালে কর্মস্থলে যোগ দিতে এসে কারখানার গেটে বন্ধের নোটিস দেখেন শ্রমিকরা।
Published : 26 Apr 2025, 01:50 PM
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে একটি সোয়েটার তৈরির কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকালে আশুলিয়ার গৌরীপুর এলাকার ন্যাচারাল গ্রুপের ‘ন্যাচারাল উল ওয়্যারস লিমিটেড’ কারখানাটির মূল ফটকে বন্ধের নোটিস সাঁটিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
পরে সকালে কর্মস্থলে যোগ দিতে এসে বন্ধের নোটিশ দেখেন শ্রমিকরা।
নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে- বেতন ভাতা ও ওভার টাইম পরিশোধের পরেও কর্মরত শ্রমিকদের দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জোরপূর্বক কাজ বন্ধ রাখা ও বেআইনি ধর্মঘট, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও কারখানার সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী শনিবার থেকে কারখানাটি নির্দিষ্টকালের জন্য লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ কারখানার জ্যাকেট অপারেটর হাসান আলী বলেন, “আমাদের কারখানায় কোন বেতন বকেয়া নেই তবে ৭ তারিখের বেতন কর্তৃপক্ষ ২৫ তারিখে দেন। ওভারটাইম বিল প্রতি সপ্তাহে দেয়ার কথা থাকলেও এক-দেড় মাস পর দেন। বাৎসরিক ছুটির ভাতা প্রতি বছর না দিয়ে দুই বছর পর দেন।
“এসব বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছিল শ্রমিকরা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হলে বেশ কিছু শ্রমিককে কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে মাস্তানরা মারধর করে।”
তিনি আরও বলেন, “শুক্রবার কারখানায় সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। কিন্তু আজ (শনিবার) কারখানায় এসে মূল ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখে ফুঁসে শ্রমিকরা।”
এ বিষয়ে জানতে ন্যাচারাল উল ওয়্যারস লিমিটেডের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) সৈয়দ মিলাদুল হুদার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিল্প পুলিশ-১ (আশুলিয়া অঞ্চল) এর সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম ভূঁঞার মোবাইলেও একাধিকবার কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “ন্যাচারাল উল ওয়্যারস লিমিটেড কারখানাটিতে প্রায় ৯০০ শ্রমিক কাজ করেন। তবে দীর্ঘদিন যাবত সময়মতো বেতন ভাতা পরিশোধ করছে না কর্তৃপক্ষ।
“এ নিয়ে আন্দোলন করায় ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদেরকে মারধরও করেছে বলে অভিযোগও উঠেছে। এর মধ্যেই শনিবার শ্রমিকরা কর্মস্থলে এসে কারখানা বন্ধের নোটিস দেখতে পায়।”
বিষয়গুলো নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান এ শ্রমিক নেতা।