বরিশালের পাইকারি বাজার থেকে উধাও আলু

আড়তদাররা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে পাইকাররা আলু বিক্রি না করায় এই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2024, 04:33 PM
Updated : 16 Feb 2024, 04:33 PM

দুইদিন ধরে আলুশূন্য হয়ে পড়েছে বরিশালের পেঁয়াজপট্টির আড়তগুলো। বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে আলুর আড়তগুলো খালি হতে থাকে; শুক্রবার সকাল থেকে কোনো আড়তেই আলু পাওয়া যায়নি। বেচাকেনা না থাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন এখানকার শ্রমিকরা।

আড়তদাররা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে পাইকাররা আলু বিক্রি না করায় এই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

নগরীর পেঁয়াজপট্টির মেসার্স সাজ্জাদ হোসেন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সাজ্জাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেউ তো লস দিয়ে বিক্রি করবে না। সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই দামে পাইকাররা কিনতে পারে না। তাই আলু আনে না।”

তিনি জানান, এক আড়তদার ৩৮ টাকা দরে আলু কিনে এনে বিক্রি শুরু করেছিলেন। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর এসে তাকে জরিমানা করেছে।

“ভোক্তা অধিদপ্তর সরকার নির্ধারিত দামে কিনতে পারলে আলু আনতে বলেছে। তা না হলে আনতে নিষেধ করে দিয়েছে। তারা (পাইকার) যদি সরকারি রেটে এনে দেয়, আমরা বিক্রি করব,” বলেন এই ব্যবসায়ী।

এখানে মূলত মুন্সীগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গ থেকে আলু আসে।

মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের মালিক জুয়েল খান বলেন, এখানকার সিংহভাগ পাইকার মুন্সীগঞ্জের। সেখান থেকে যে দামে কিনে, এখানে এনে বিক্রি করলে লোকসান হয়। তাই তারা আনেন না।

তিনি বলেন, “সরকার পাইকারিতে বাজারে ২৬-২৭ টাকা ও খুচরায় ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে বলেছে। কিন্তু এ দামে পরতা হয় না”

পেঁয়াজপট্টি এলাকায় ৩৫টি আড়ত রয়েছে। এসব আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়। আলু না থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন এখানকার শ্রমিকরা।

দিনভর একশ টাকাও আয় হয়নি জানিয়ে শ্রমিক হারুন ফকির বলেন, প্রতিটি আড়তে তিন থেকে চারজন শ্রমিক কাজ করেন। সবমিলিয়ে ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। তারা এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।

এদিকে বেশি দামে আলু বিকি করায় জরিমানার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত সপ্তাহে প্রতিদিন আমরা পিঁয়াজপট্টির তদারকি করেছি। বেশি দামে আলু কেনাবেচার কারণে কোনো জরিমানা করা হয়নি। শুধু মূল্যতালিকা না থাকায় জরিমানা করা হয়েছে।

“আমরা আলু সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছি। সঠিক ভাউচার রাখার পরামর্শ দিয়েছি। বেশি দামে কেনাবেচা করতে নিষেধ করেনি। জেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নজরদারি করা হয়েছে।”

বাজারে আলু না থাকার বিষয়টি অবগত নন বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহেল মারুফ। “বৃহস্পতিবার তো ছিল। আজ নেই, বিষয়টি জানি না,” বলেন তিনি।

এ বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন বলে জানান তিনি।

[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]