গ্রেপ্তাররা নলডাঙ্গায় জে. এন্ড জে. টেক্সটাইল, নদী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড ও সেনাকল্যাণ সংস্থা নামের প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
Published : 09 Feb 2023, 05:38 PM
নাটোরের নলডাঙ্গায় সমবায় সমিতিতে মোটা অংকের ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে অন্তত আড়াইশ জনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চার জনকে আটক করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার র্যাব-৫ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কোমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন জানান, বুধবার রাতে মাধবনগর থেকে ‘নদী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানের চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরা হলেন সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নলডাঙ্গার হালতির জহুরুল ইসলাম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাসুদেবপুরের মওদুদ রহমান মধু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাধবনগরের বাবুল হক বাবু এবং অফিস স্টাফ একই এলাকার প্রকাশ চন্দ্র প্রামানিক।
র্যাব কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রতারণার শিকার অভিযোগকারী নলডাঙ্গার পশ্চিম মাধবনগরের মো. ফরিদ প্রমানিকসহ ওই এলাকার আরও চারজন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রধান আসামি মো. জহুরুল ইসলাম নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম মাধনগর গ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে জে. এন্ড জে. টেক্সটাইল, নদী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড ও সেনাকল্যাণ সংস্থা নামের প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
এসব প্রতিষ্ঠান ভুক্তভোগীদের স্ত্রীসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় আড়াইশ সাধারণ মানুষের কাছে মোটা অংকের ঋণ দেওয়ার আশ্বাসে সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা জামানত নেয়।
গ্রাহকদের কাছ থেকে নদী সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের কর্মচারীরা পাশ বইয়ের মাধ্যমে এসব টাকা সংগ্রহ করেন। সাধারণ গ্রাহকরা জমা করা টাকার মাধ্যমে ঋণ চাইলে বিবাদীরা ঋণ না দিলে গ্রাহকেরা তাদের জমা টাকা ফেরত চায়। পরে আসামিরা টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যান।
এরপর বুধবার অভিযোগকারী মো. ফরিদ প্রমানিকসহ আরও চারজন আসামিদের বাড়ি গিয়ে তাদের জমা করা টাকা ফেরত চাইলে অর্থ না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
পরে তারা সেখান থেকে ফিরে উপজেলার পাটুল বাজারে এসে র্যাবের টহল দলকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি বিস্তারিত জানান। এরপর র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তাররা সাক্ষীদের সামনে পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন এলাকায় শতশত মানুষকে মোটা অংকের ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা জামানত নিয়ে আত্মসাৎ করেছে।
অভিযানে কিস্তি আদায়ের চারটি পাশ বই উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ফরহাদ হোসেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় আটকদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, জহুরুল ইসলাম এর আগেও মানুষের সাথে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। জেলও খেটেছেন। জেল থেকে বের হয়ে আবার প্রতারণা শুরু করেছিলেন।
মাধবনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন দেয়ান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই সমিতি সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষদের একেবারে নিঃস্ব করে দিয়েছে। কারো কাছে ১০ হাজার, কারো কাছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে বড় ঋণ দেওয়ার কথা বলে। আড়াইশ থেকে তিনশ হত দরিদ্র মানুষ এই সমবায় সমিতির প্রতারণার শিকার হয়েছে।