“আমাদের দায়িত্ব তরুণদের ভাষা ও দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা ও বাস্তবায়ন করা,” বলেন তিনি।
Published : 25 Jan 2025, 11:19 PM
চব্বিশে তরুণরা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
তিনি বলেছেন, “আমাদের দায়িত্ব হবে তরুণদের ভাষা ও দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা ও বাস্তবায়ন করা।”
শনিবার দুপুরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ অডিটোরিয়ামে ‘ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশ’র অষ্টাদশ জাতীয় যুব সম্মেলনে বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
‘একাত্তরের পরে যা অমীমাংসিত থেকে গেছে সেটির ফলে চব্বিশ হয়েছে’ মন্তব্য করে উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, “সেই অমীমাংসিত জায়গাগুলো মীমাংসিত করতে আমরা একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা অনেক কিছু করতে পারিনি। দেশের মাটি পেয়েছিলাম, ফ্ল্যাগ পেয়েছিলাম, গড়তে পারিনি।”
দরিদ্রতা নিয়ে তিনি বলেন, “কারো শক্তি নেই যে আমাকে বিশ্বাস করাবে, আমি দরিদ্র। আর যখন আমি দরিদ্রতাকে অস্বীকার করি, তখন দারিদ্র আমার জীবনে আর অস্তিত্ব পায় না। আমি মনে করি, এতটাই মৌলিক, এতটাই শক্তিশালী ও এতটাই সহজ দারিদ্রকে শেষ করে দেওয়া।
“অর্থাৎ দারিদ্রকে শেষ করতে হলে প্রথমে মনের জগৎ থেকে দারিদ্রকে মুছে ফেলতে হবে এবং যে কারণগুলোতে আমি দরিদ্র সেগুলোকে মুছে ফেলতে হবে। তাহলে রইল আমি ধনবান, আমার প্রাচুর্য আছে, আমার মেধা আছে, আমার গুণ আছে, আমি পৃথিবী পালটে দিতে পারব।”
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “২০২৪ আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশকে ভালোবাসতে শিখেছে, এই মাটিকে ভালোবাসতে শিখেছে, ফ্ল্যাগকে সম্মান করতে শিখেছে। ওরা এবার দেশটাকে গড়বে, যেখানে আমরা পারিনি সেখানে তাদের শুরু।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরো বলেন, আমি ২৪টাকেও মুক্তিযুদ্ধ মনে করি।
আর যদি আমরা এই যুদ্ধে কোনোভাবে পা পিছলে পড়ি, তাহলে জেনে রেখ, আরেকটা প্রজন্ম তোমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে বাক স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, মানবাধিকার ছিল না। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার, ব্যাংক লুট ছিল। দেশটা দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। সুশাসন ও গণতন্ত্র কার্যকর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সবার মধ্যে সম্প্রীতি দরকার।
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ইন্টেরিম কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা বলেন, “তরুণেরা সংগ্রাম করছে সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তরুণেরা ছোট ছোট করে সমাজের প্রত্যেকটি অসংগতি, অন্যায়, অসমতার পরিবর্তন এনেছে।
তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা সকল অন্যায়-অবিচারের বিপক্ষে, সামাজিক অসমতার বিরুদ্ধে। সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল, তরুণদের বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া।
তারুণ্যের প্রত্যয়ে মুছে যাবে ভেদ, গড়ব সুশাসন ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সম্মেলনে প্রায় ৮ শতাধিক স্বেচ্ছাব্রতী তরুণ অংশ নেন।
সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আঞ্চলিক বিতর্কের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ক্যাথি বার্কের লেখা ‘আই স এ রেভ্যুলেশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আগামী ১ বছরের জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ফোরাম কমিটি ঘোষণা করা হয়।