উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, প্রক্টরসহ কয়েক কর্মকর্তার পদত্যাগের জন্য আন্দোলন শুরু করে।
Published : 18 Aug 2024, 09:27 PM
সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা হলেও গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাশে ফেরেননি। তারা উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। প্রশাসনিক ভবনের ফটকসহ সব কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, প্রক্টরসহ কয়েক কর্মকর্তার পদত্যাগের জন্য আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু তারা পদত্যাগ না করে আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অব্যাহত রাখে। রোববার ক্লাসে যোগ না দিয়ে শিক্ষার্থীরা দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয় তথা প্রশাসনিক ভবনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কক্ষ ত্যাগের সুযোগ দিয়ে দরজায় ও ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিগত বছরগুলোতে বর্তমান প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা বিভিন্ন দমন-পীড়ন চালিয়েছে। বিনা দোষে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, বহু শিক্ষার্থীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানি, ছাত্রবাসে পুলিশের চিরুনী অভিযান, অস্ত্রের মুখে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করতে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মানসিক চাপ প্রয়োগ এবং গভীর রাতে নিরাপত্তা ব্যতিরেকে আবাসিক হলগুলো থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার ঘটনায় সবাই ক্ষুব্ধ। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনকে ১১ দফা দাবি জানিয়ে ১৩-১৫ অগাস্ট উপাচার্যকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু তা করা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা ১৬ অগাস্টের মধ্যে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, প্রক্টরসহ কয়েক কর্মকর্তার পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়। তারা পদত্যাগ না করায় ১৮ আগস্ট প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে।
এরপরও তারা পদত্যাগ না করলে যানবাহন চলাচল ও দাপ্তরিক কার্যক্রমে চূড়ান্ত অসহযোগিতার ডাক দেওয়া হবে এবং তা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শিক্ষক-কর্মচারীরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “প্রতিবছর জুন ক্লোজিংয়ের কাজ সারতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের কারণে বিগত অর্থবছরের অনেক ধরনের আর্থিক সমন্বয় ও ঠিকাদারদের বকেয়া বিলসহ বিভিন্ন কাজের ফাইল ওয়ার্ক শেষ করতে পারেননি উপাচার্য। এসব কাজের মধ্যে হলো বিভিন্ন প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর, শিক্ষার্থীর বৃত্তি প্রদান, উন্নয়নমূলক কাজের বিল। এ ছাড়া প্রশাসনিক নিয়মিত কার্যক্রম যেমন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি মঞ্জুর, যোগদান, এনওসি প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাপকবভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অগাস্ট মাসের বেতন পাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।”