চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছেন গরু-মহিষের খামারিরা।
Published : 25 Sep 2024, 10:36 PM
নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বেড়ে চরাঞ্চলের অন্তত সাড়ে ৩ হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম বলেন, বুধবার ঈশ্বরদীর হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির লেভেল ১২ দশমিক ৩২ মিটার। সেই হিসাবে বর্তমানে লালপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার দেড় মেটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী পাঁচ থেকে সাত দিন পানি বাড়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত দুদিনে পদ্মায় পানি বেড়ে লালপুরের বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৮টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিলমাড়ীয়া গ্রামের কৃষক মুনতাজ আলী বলেন, “আমার তিন বিঘা জমিতে মূলা ও বেগুনের আবাদ তলিয়ে গেছে।”
আরাজি বাকনাই চরের কৃষক আলাল আলী বলেন, “আমার মূলা, গাজর বেগুনসহ প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমির ফসল ডুবে গেছে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, লালপুরে পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে ৪১০ হেক্টর আঁখ, ৪৫ হেক্টর শাকসবজি, ১০ হেক্টর কলা এবং ১০ হেক্টর মাসকালাইসহ মোট তিন হাজার ৫৩৫ বিঘা ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছেন এখানকার গরু-মহিষ খামারিরা।
ইলশামারী চরের খামারি আরিফ মণ্ডল বলেন, “গরু -মহিষ নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি, কোথাও কোনো ঘাসও নেই, সব তলিয়ে গেছে।”
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য লাল মোহম্মদ বলেন, “গত দুদিন আকস্মিক পানি বেড়ে আমার ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি ক্ষেত। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে প্রায় পাঁচশ পরিবার পানি বন্দি হয়ে যাবে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, “নদীর পানি কমে যাওয়ায় কৃষকরা নতুন করে ফসল আবাদ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ পানি বাড়ায় এগুলো ডুবে গেছে, পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ বিস্তারিত জানা যাবে “
লালপুর উপজেলার ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, “আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছি সার্বিক খোঁজখবর রাখার জন্য। কৃষি বিভাগ চর এলাকায় গিয়ে কাজ করছে। ফসলের ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”