আগামী শুক্রবার শুরু হবে দুদিনব্যাপী এ মেলা৷
Published : 20 Nov 2024, 10:52 PM
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর গ্রামে অনুষ্ঠেয় দু’দিনব্যাপী ‘মহতি সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ডিসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আয়োজকরা৷
বুধবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান৷
বিগত বছরগুলোর মত এবারও উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের ওই গ্রামে সাধুসঙ্গ ও লালন মেলার আয়োজন করেছে মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি৷
আগামী শুক্রবার শুরু হবে দুইদিনব্যাপী এ মেলা৷
তবে মেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে গত শুক্রবার শতাধিক ব্যক্তি ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে এলাকায় মিছিল করেছেন৷
মেলা বন্ধের পক্ষে কয়েকজন গত সোমবার ডিসির কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন৷
এদিকে, মেলা বন্ধের চেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার মানববন্ধনের আয়োজন করে মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি৷
মানববন্ধনে এলাকাবাসী, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক কর্মীরা অংশ নেন৷
এতে দেওয়া বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি বলেন, “এ বছর লালনের আড়াইশতম জন্মবর্ষ৷ লালন আমাদের দেশ শুধু নন, সারাবিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন তার মানবতার বাণী প্রচারের মধ্য দিয়ে৷”
তিনি বলেন, “আঠারো কোটি মানুষের এদেশ আউল, বাউল, ফকির, সন্ন্যাসী, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী বাঙালির সকলের৷ কারও মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া যাবে না৷ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাই ছিল- এদেশ সকল মানুষের হবে৷ সব বৈষম্য দূরীকরণের মধ্যদিয়ে সব মত আমরা প্রতিষ্ঠা করব৷”
ডিসির উদ্দেশে রাব্বি বলেন, “আপনার দায়িত্ব হচ্ছে শান্তি- শৃঙ্খলা নির্বিঘ্ন করা, মত প্রকাশ এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা৷ নির্বিঘ্নে যাতে লালন মেলা হতে পারে সে ব্যবস্থা রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাকে করতে হবে৷”
মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ জালাল বলেন, “এখানে প্রতিবছরই সাঁইজির নামে সাধুসঙ্গ হয়৷ এ অনুষ্ঠানে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন প্রশাসন নেয়৷ এ পৃথিবীতে প্রকৃতির সকল প্রাণীর সমান অধিকার৷”
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, সাবেক সভাপতি জাহিদুল হক দিপু, গণসংহতি আন্দোলনের মহানগরের সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব।
বক্তারা বলেন, এ বিশ্বে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর মানুষ রয়েছে৷ জাতিগতভাবে আমরা বাঙালি হলেও, এদেশে প্রায় পঞ্চাশের অধিক আদিবাসী রয়েছে৷
হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এবং আদিবাসী, সবাই মিলে আমাদের এ বাংলাদেশ৷ এখানে প্রত্যেকের স্ব-স্ব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে৷
তারা আরও বলেন, নিজের মত অন্যজনের ওপর চাপিয়ে দিয়ে কণ্ঠরোধ করা শুধু চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতায়ই নয়, এটি একাত্তরের বিরোধিতা, সংবিধানেরও বিরোধিতা৷
আরও পড়ুন: