হাই কোর্ট বলেছে, পৌরসভার কেউ প্রার্থী হতে পারবে না। কিন্তু একজন নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া বাকি সবাই পৌরসভার ভোটার।
Published : 26 Apr 2024, 09:04 PM
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পৌরসভার ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন না এবং পৌর এলাকার কেউ প্রার্থী থাকতে পারবেন না বলে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এই সিদ্ধান্তের ফলে এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া আর কারো ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। সেখানে এখন কীভাবে নির্বাচন হবে, সে প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রপক্ষে একজন আইনজীবী জানিয়েছেন, এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, তারাও আদালতের রুল পেয়েছেন। তবে এখনো করণীয় ঠিক হয়নি।
প্রথম দফায় ২১ মে যে দেড়শ টি উপজেলায় ভোট হতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি চাঁদপুর সদর।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বাছাই শেষে চেয়ারম্যান পদে চার জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার।
প্রার্থীদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা ছাড়া বাকি সবাই পৌর এলাকার ভোটার।
এই প্রার্থী গত ২৩ এপ্রিল হাই কোর্টে আদালতে রিট আবেদন করে পৌরসভা নির্বাচন আইন/বিধিমালা/ নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করেন। সেই সঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে পৌরসভার ভোটারদের ভোট প্রদান, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা থেকে বারিত করার আবেদন করেন।
পরদিন বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ আদেশ দেয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ বলেন, “আদালত বলেন, সদর উপজেলা নির্বাচনে ১৪টি ইউনিয়নের নাগরিকরা ভোট দেবে। আর পৌরসভার কোনো ভোটার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না।“
তার মানে এই আদেশ অনুযায়ী আবিদা সুলতানা ছাড়া বাকি প্রার্থীদের আসলে ভোটে অংশ নেওয়ার যোগ্যতাই নেই।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, কেন পৌরসভার ভোটার এবং পৌর প্রার্থীদের নিষিদ্ধ তথা বারিত করা হবে না- চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন সচিব, রিটার্নিং অফিসারসহ ৬ জনকে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, “চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সেবা ও বরাদ্দ পৌরসভার ভোটাররা পায় না। পৌর এলাকায় আমাদের কাজ করার কোনো অধিকারও নেই।কারণ, পৌর এলাকার সব কিছু পৌরসভাই দেখে। তাই উপজেলা পরিষদ থেকে পৌর এলাকার ভোটারদের বাদ দেওয়া এবং উপজেলা নির্বাচনে পৌর এলাকার ভোটাররা প্রার্থী হতে না পারেন সে বিষয়ে আদালত রুল জারি করেছে।”
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুবিভাগের উপসচিব (আইন) মো. আব্দুছ সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ সংক্রান্ত রুলের বিষয়টি আমাদের কাছে এসেছে।এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।”
আদালতের এই আদেশের ফলে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবিদা সুলতানা ছাড়া আর কেউ নির্বাচন করতে পারবেন না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, “আদালত একটা আদেশ দিয়েছে, এখন তো আপিলে যাওয়া ছাড়া আর করার কিছু নেই, যদি কেউ আগ্রহী হয় আরকি।”
এখন এই আদেশ ঠেকাতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে যেতে হবে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি নোট দিয়ে দিয়েছি।”